সবচেয়ে ছোট হরিণ পুডু

মোঃ সাইফুল ইসলাম

হরিণ অতি পরিচিত একটি প্রাণি। এর বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। প্রজাতিভেদে এদের আকার আকৃতিতে নানা বৈষম্য দেখা যায়। আমাদের দেশে প্রাপ্ত সবচেয়ে বড় হরিণ হচ্ছে সাম্বার হরিণ। মাঝারি আকারের হরিণটি হচ্ছে চিত্রা হরিণ। এছাড়াও দেশের সবচেয়ে ছোট হরিণটি হল মায়া হরিণ। এটি কুকুরের মত ঘেউ ঘেউ করে বলে একে বার্কিং ডিয়ারও বলা হয়।
তবে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম হরিণটির নাম হচ্ছে পুডু হরিণ। সাউদার্ন ও নর্দান দুই ধরনের পুডু হরিণ আছে।  এদেরকে আন্দিজ পর্বত মালার পাদদেশ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় পাওয়া যায়। চলুন আজ সাউদার্ন পুডু হরিণ নিয়ে কিছু তথ্য জানা যাক।pudu
পুডুর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Pudu puda. মূলত পুডু গণের হরিণ প্রজাতিগুলোই আকারে ছোট। এদের মাথা ও শরীরের দৈর্ঘ্য ৮৫ সেন্টিমিটার। কাঁধের উচ্চতা ৩৫-৪৫ সেন্টিমিটার, লেজ ৮ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। সাধারণতঃ এদের ওজন হয় ৬.৫-১৩.৫ কেজি।
এদের শরীরের রং হয় লালচে বাদামী থেকে কালচে বাদামী। শরীরের নিচ এবং পায়ের দিকে কিছুটা উজ্জ্বল হয়। মুখ এবং কানের ভিতরটা কমলা রংয়ের হয়। চোখ আর কান ছোট হয়। বাচ্চাগুলোর গায়ে সাদা দাগ থাকে। তাই এরা ঝোপের আড়ালে খুব সহজে লুকিয়ে যেতে পারে। পুরুষের অ্যান্টলার বা শিং থাকে যা জুলাই মাসে পড়ে যায়।S
সাউদার্ন পুডু একাকী থাকে। তবে এপ্রিল থেকে মে মাস অর্থাৎ প্রজনন মৌসুমে পুরুষ হরিণের সাথে বিচরণ করে। গর্ভধারনকাল প্রায় ৭ মাস। এরা বছরে একটি বাচ্চা দেয়। বাচ্চাগুলো প্রায় দুই মাস দুধ পান করে। তবে বাচ্চাগুলো ৮-১২ মাস বয়সে মা থেকে পৃথক হয়ে যায়।
এই হরিণ দিবারাত্রি সমানভাবে খাবারের জন্য বের হয়। এরা ঘাস, পাতা, বাকল, বীজ, ফলমূল খেয়ে থাকে। ছোট আকার হওয়ায় এরা প্রায়ই পিছনের দুই পায়ে ভর দিয়ে উচু হয়ে খাবার খায়। আকারে ছোট ও পাতলা হওয়ায় অনেকে একে পুষতে নিয়ে আসে। আর তাই এটিও এখন বিলুপ্তির পথে।

শিক্ষার্থী: চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics