বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসঃ মৃত্তিকা থেকেই হোক পৃথিবী সুরক্ষার সূচনা
মনিজা মনজুর
মৃত্তিকা; যে কি না সভ্যতার ক্রমবিকাশের সকল উৎস আর নিদর্শন ধারণ করে আছে, আমরা তাঁকে নিয়েই কথা বলছি। খাদ্য উৎপাদন থেকে বহুতল ভবন নির্মাণে, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবের আবাসস্থল থেকে সুবিশাল মহীরূহে, পানি পরিশোধন থেকে জলবায়ু সুরক্ষায় এমনকি সংস্কৃতি বিনোদনেও, কোথায় নেই মাটির অবদান?
একটি প্রবাদ আছে- ‘মৃত্তিকা সর্বংসহা’। হ্যাঁ, লক্ষ-কোটি বছর ধরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে, নবরূপে রূপান্তরিত হয়ে সে সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। যে মৃত্তিকা পরম মমতায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে মানবকুলের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের যোগান দিয়ে যাচ্ছে সেই মৃত্তিকার উপর দাঁড়িয়ে কখনো কি ভেবে দেখেছি সে কেমন আছে? ভেবেছি কি, মৃত্তিকা না থাকলে আমাদের অস্তিত্ব থাকতো কি না?
ক্রমবর্ধমান নগরায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস, জলাবদ্ধতা, পানি এবং বাতাসের ক্রিয়ার ফলে মাটিক্ষয় এবং অপরিকল্পিত চাষাবাদের ফলে বিশ্বের অনেক অঞ্চলের মৃত্তিকার স্বাস্থ্য এখন ভঙ্গুরপ্রায়। মাটির গুণগত পরিমাণ হ্রাসের ফলে খাদ্যের পুষ্টি উপাদানেও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে, দৃশ্যমান হচ্ছে বাস্তুসংস্থানের অসামঞ্জস্যতা। অন্যদিকে অজ্ঞতার কারণে অধিক মুনাফার আশায় কেউ কেউ ফসলি জমিতে নির্মাণ করছেন বাসস্থান আবার অধিক উৎপাদনের আশায় জমিতে অহেতুক সার-কীটনাশক ব্যবহার করে পুষ্টি উপাদানহীন ফসল ফলানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। এভাবেই মানবসৃষ্ট কারণে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বৈচিত্র্যে ভরপুর অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ- মাটি। এই ভয়ংকর ধ্বংসযাত্রার মূল শেকড় তবে কোথায়? অভাব আমাদের জ্ঞানের, সচেতনতার আর সুপরিকল্পনার।
কোনো এলাকার এক ইঞ্চি নতুন মাটি উৎপন্ন হতে ওই এলাকার জলবায়ু এবং মাটি গঠনের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে কমপক্ষে প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ বছর সময় লাগে! যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা গেছে পানি এবং বাতাসের ক্রিয়াকলাপ জনিত কারণে শুধুমাত্র চাষাবাদের জমি থেকেই প্রতি বছরে প্রায় ১.৭ বিলিয়ন টন মাটি ক্ষয় হয় (সূত্রঃ ইউএসডিএ, ২০০৭)। বাংলাদেশ সরকারের প্রাকৃতিক সম্পদবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ”সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস” (সিইজিআইএস)-এ গবেষণাপ্রসূত ফলাফল অনুযায়ী ১৯৪৩ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত উপকূলে ভূমি ভাঙ্গনের পরিমান ১,১৮০ বর্গ কিঃমিঃ এবং গড়ার পরিমান ২,৯৭০ বর্গ কিঃমিঃ এবং মোট জেগে ওঠা ভূমির পরিমান ১,৭৯০ বর্গ কিঃমিঃ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) রামগতি স্টেশনের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, পাহাড়ি এলাকায় প্রতি বছর মোট মৃত্তিকাক্ষয়ের পরিমাণ ২.০ থেকে ৪.৭ টন/হেক্টর। এছাড়া বনাঞ্চল উজাড় হওয়ার কারণে দেশের বনভূমির পরিমাণ প্রতি বছর প্রায় ৩ শতাংশ হারে হ্রাস পাচ্ছে, ফলস্বরূপ এসব এলাকায় পানি দ্বারা মৃত্তিকাক্ষয়ের পরিমাণ বছরে প্রায় ১০২ টন/হেক্টর (সূত্রঃ বাংলাপিডিয়া)। মৃত্তিকার সহজলভ্যতার তুলনায় হারানোর পরিমাণ টা আঁচ করে নিন তাহলে… সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রথমবারের মতো বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট মৃত্তিকা ক্ষয় সংক্রান্ত একটি গ্লোবাল ম্যাপ প্রকাশিত হয়েছে। মানবসৃষ্ট কারণে যে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এবং অধিক পরিমাণে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেটি আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মৃত্তিকা সম্পদের ক্ষয় বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তায় মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। আশঙ্কার বিষয় এই যে, মৃত্তিকার ক্ষয় প্রশমনে যে পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে তা এই অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের ফলে হুমকির সম্মুখীন। বিশ্বের ৬৩ টি দেশের ৩,৬২৫ টি স্টেশন থেকে সংগৃহীত তথ্য নিয়ে এ গবেষণা পত্রটি প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, বৃস্টিপাতজনিত মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমান এক বছরে হেক্টর প্রতি ঘন্টায় গড়ে ২,১৯০ মেগা জুল মিলিমিটার। যা দক্ষিণ আমেরিকা, মাদাগাস্কার, মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা, উত্তর অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিন পূর্ব এশিয়ায় সর্বোচ্চ!
জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হলো- আলো, বাতাস, পানি এবং মাটি। এই চারের সমন্বয়ে উদ্ভিদের গড়ে ওঠা; যা আমাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের যোগান দেয়। ভূগর্ভস্থ শিলার ক্রমাগত পরিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয় মাটি। অসংখ্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীবের বাসস্থান এই মাটি। অণুজীবগুলো তাদের ক্রমাগত কার্যকলাপের ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। এক টেবিল চামচ মাটিতে অণুজীবের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে মানব সংখ্যার সমান! বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় মাটির ভূমিকা অনন্য। তাই বলাই যায়, মাটি জীবন ধারণ করে।
শহুরে মানুষের সাথে মাটির সম্পর্ক খুব একটা গভীর না। কিন্তু এই মাটিই শহুরে জীবনকে পূর্ণতা দিচ্ছে নিঃস্বার্থভাবে। ভেবে দেখেছেন কখনো, আপনার পিজ্জা হাটের মজাদার পিজ্জার সাথেও যে মাটির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য? পিজ্জার মুখরোচক উপাদান টমেটো, ক্যাপসিকাম, ক্লোভার, পেঁয়াজ, গাজর আর পিজ্জা ক্রাস্ট; সেও তো আসে গম থেকেই, যা মাটিতেই ফলে। আর বীফ পিজ্জার বীফ? গরু ঘাস খেয়ে তার দেহে যে পুষ্টি নেয়, সেই ঘাস তো মাটিতেই জন্মে। শহুরে জীবনে মাটির গুরুত্ব বুঝতে বাড়ির পাশে খালি জায়গায়, কিংবা আপনার বাড়ির ছাদে ছোট্ট একটা বাগান করেই ফেলুন না!
মাটি ছাড়া কৃষি অকল্পনীয় একটা ব্যাপার। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। মাটি দেহের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদানের আধার। তাই উর্বর মাটি কৃষিক্ষেত্রের আধার।
মাটিতে ধারণকৃত পানি উদ্ভিদের খাবার, আবার প্রাকৃতিক পানি পরিশোধনেও মাটি অনবদ্য ভূমিকা পালন করে। বৃষ্টির পানি মাটির উপরিভাগে বিভিন্ন সার এবং পশু বর্জ্যের সাথে মিশে দূষিত হয় এবং ভূগর্ভস্থ এলাকায় পরিচালিত হয়। ভূগর্ভস্থ এলাকার মাটির বুনট যদি সূক্ষ্ম বা মিহি হয় তাহলে তা প্রাকৃতিকভাবে খুব ভালো পানি পরিশোধনকারী হিসেবে কাজ করে। শহুরে এলাকায় সবুজায়নের মাধ্যমেও পানি ধারন এবং পরিশোধন করা যায়। আপনার নিকটস্থ হ্রদের পানি যদি পরিষ্কার দেখতে পান তাহলে ধন্যবাদ দিন মাটিকে। কারণ মাটির চেয়ে ভালো পরিশোধনকারি দ্বিতীয়টি নেই।
‘ইট-পাথরের দালান’। এই ইট কিন্তু বালু এবং কাদা মাটির মিশ্রনে তৈরি। আর দালান, কাঠের বাড়ি, মাটির ঘর, খড়ের ঘর, ছনের ঘর কিংবা বাঁশের ঘর যেভাবেই বলুন না কেন সব কিন্তু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মাটির উপরেই। তবে শহুরে এলাকায় বাড়িঘর অবশ্যই পাথর এবং বালি থাকবে এমন বুনটের মাটির উপর নির্মাণ করতে হয়। নতুবা সেখানে পানি জমে ভবন ধসের আশংকা থাকে।
এবার আসি ‘বিনোদনে মাটি’। একটু অন্যরকম তাইনা? ছোটবেলায় সমুদ্রতীরে বালুর ঘর তৈ্রি করেছেন অনেকেই। সেখানেই তো মাটি, খেলার ছলে আপনার স্বপ্নের বালুর রাজপ্রাসাদেও মাটির উপস্থিতি। ঘোড়দৌড়ের খেলায় ঘোড়ার সুরক্ষা এবং পর্যাপ্ত শক্তির জন্য প্লে গ্রাউন্ডকে চার স্তরের অর্থাৎ চারটি ভিন্ন বুনটের মাটিতে সাজানো হয়। আর শৈশবে বর্ষাদিনে কাদামাটিতে লুটোপুটি। মনে পড়ে?
সর্বক্ষেত্রে অবাধ বিচরণ যার, তাঁকে নিয়ে ২০১৭ সালের মৃত্তিকা দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়- ‘Caring for the planet, starts from the ground.’ অর্থাৎ, গ্রহের সুরক্ষার সূচনা হোক মৃত্তিকা থেকেই। কিভাবে?
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এখন সমগ্র পৃথিবী সোচ্চার। মৃত্তিকার সাথে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার এক অনন্য সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শিল্পকারখানা ছাড়াও অসংখ্য উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী এই কার্বন ডাই অক্সাইড। এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস যাতে বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে না পড়ে, একে বন্দী করার ব্যবস্থা করেছেন বিজ্ঞানীরা। অনেকটা প্রদীপের দৈত্য বন্দী করার মত ব্যাপার। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় ‘কার্বন ক্যাপচার’ বা ‘কার্বন সিকুয়েস্ট্রেশন’। পরিবেশে যে বিপুল পরিমাণ কার্বন ছড়িয়ে পড়ে তাকে এক বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে মাটির হাজার ফুট নিচে বছরের পর বছর সঞ্চিত করে রাখা হয়। একে সবুজ কার্বনও বলেন অনেকে। শুধুমাত্র মাটিই নয়, পানির নিচেও অর্থাৎ সমুদ্রের তলদেশেও কার্বন সঞ্চয় করে রাখা যায়, যাকে নীল কার্বন নামে অভিহিত করা যায়। মাটির নিচে প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন টন মানব সৃষ্ট কার্বন ডাই অক্সাইড সঞ্চয় করে রাখা যাবে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। সাধারনত, কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস পৃথিবীর গভীরে, উচ্চচাপে তরলের ন্যায় আচরণ করে। সচ্ছিদ্র পাথরের ভিতরে ঢুকে অল্প জায়গায় প্রচুর কার্বন-ডাই-অক্সাইড সংরক্ষণ করা যায়। এই পদ্ধতিকে ‘জিওলজিক্যাল সিকুয়েস্ট্রেশন’ বলা হয়। মাটির নিচের পাথর স্তরে পাইপলাইনের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড প্রবেশ করানো হয়। এই প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগারগুলোর উপরে পাথরের আরেকটি স্তর থাকে যা ভেদ করে এই গ্যাস বের হতে পারে না। এটি একটি ঢাকনার মত কাজ করে গ্যাসকে আটকে রাখে। গবেষকরা দেখেছেন যে ব্যাসাল্টে (আগ্নেয় শিলা) কার্বন ডাই অক্সাইড প্রবেশ করালে তা পরবর্তীতে চুনাপাথরে রুপান্তরিত হয়। ফসল উৎপাদন এবং জলাভূমি সংরক্ষনও মাটিতে কার্বন জমা করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে দুর্বল মাটি, বনায়ন ধ্বংস প্রভৃতি কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে থাকে। তাহলে বুঝতে পারছেন? জলবায়ুর উষ্ণতা কমানোর সমাধান লুকিয়ে আছে মৃত্তিকায়! মৃত্তিকা জীবন ধারণ করে। বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে মৃত্তিকার অভ্যন্তরে কার্বন জমা রাখার বিষয়টি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়, তবে মৃত্তিকা কতটুকু পরিমাণ একে ধারণ করতে পারবে, সেদিকে লক্ষ্য করা উচিত। সেই সাথে, ফসল উৎপাদনে যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেই দিকটি নিয়েও ভাবনার প্রয়োজন আছে বৈকি! তবে বাংলাদেশে এর প্রয়োজনীয়তা খুব একটা নেই বললেই চলে। কারণ সামগ্রিক কার্বন নিঃসরনের তুলনায় বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরনের হার মাত্র ০.২%!
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হয়েও ভুক্তভোগী। ভূ প্রকৃতিগত অবস্থানের কারণে আমাদের প্রতিকূল পরিবেশের সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় প্রতিনিয়ত। মানুষ প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ শেষে আবার উঠে দাঁড়ায়। মাটিকে আঁকড়ে ধরে নব প্রাণের সঞ্চারে। নতুন উদ্দীপনায় শুরু করে চাষাবাদ। ক্ষতবিক্ষত মাটি যেভাবে সইতে পারে, সেভাবেই মাটিতে কৃষিকাজ চালিয়ে যান। আগাম ফসলের চাষ কিংবা জৈব পদ্ধতিতে অথবা সাথী ফসল (companion crop) বা শস্য আবর্তন (crop roration) পদ্ধতি প্রয়োগ করেন তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকে। কারন তাঁরা বোঝেন মাটির মায়া কী!
মৃত্তিকা হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা ভূগর্ভস্থ শিলার বিভিন্ন উপায়ে পরিবর্তিত হওয়ার এক বিশেষ রূপ। কোনো একটি অঞ্চলের জলবায়ু কিরূপ ছিল তা সেই অঞ্চলের মাটি দেখে সনাক্ত করা যায়। এই বিশেষ মাটিকে বলা হয় “প্যালিওসল”। এর আরো একটি বিশেষত্ব হল, হাজার বছর পূর্বে ওই অঞ্চলের জলবায়ু সম্পর্কে ধারণা দিয়ে, তা কিভাবে বর্তমানের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো যায়; এটি সেই ধারণাও দেয়।
শুষ্ক অঞ্চলের উৎপাদনশীল জমিতে মরুকরণ বর্তমানে আরো একটি অন্যতম সমস্যা। বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ জায়গায় প্রায় ১০০টির ও বেশি দেশ মরুকরণের ঝুঁকিতে আছে, এমনকি আমেরিকাও। টেক্সাস, ওয়িকোহোমা, কলোরাডো এর মত অঙ্গরাজ্যগুলো অতিরিক্ত ভূমিকর্ষণ এবং চারণের কারণে ১৯২০ সাল থেকেই মরুকরণের শিকার। নদীতীরবর্তী বনায়ন, স্বল্প ভূমিকর্ষণ, পরিকল্পিত পানি প্রবাহ দ্বারা মরুকরণ কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়া খরাপ্রবন অঞ্চলেও মৃত্তিকার পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য ফসল উৎপাদন এবং কৃষিকাজ ত্বরান্বিত করা সম্ভব।
বাবা ডাইও্যম নামে একজন আফ্রিকান প্রতিবেশবাদী বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা তাই রক্ষা করবো যা আমরা ভালোবাসি। আমরা তাই ভালোবাসবো, যা আমরা বুঝতে পারবো। এবং আমরা তাই বুঝতে পারবো, যা আমাদের শেখানো হবে’।
সুতরাং মৃত্তিকা কে জানুন, বুঝুন, এর গুরুত্ব উপলব্ধি করুন এবং ভালোবাসুন।