ধরিত্রী দিবসের কবিতা- বিশুদ্ধতম হতে বিষাক্ত প্রকৃতি
জুলকারনাইন
সেই শরৎ রাতের কথা বলছি, তন্দ্রাহারিনী সেই রাত
তুমি ছিলে, আমি ছিলাম, ছিলাম আমরা।
আকাশে তাঁরা ছিল, বাতাসে সুর ছিল, ছিল শুভ্র মেঘের ভেলা
নারঙ্গি দ্বীপে ছিল কেয়া, ছিল দারুচিনি ও কোরালের মেলা।
তুমি আমার পাশেই ছিলে যখন কাশফুল গুলো ডাকতো মেঘকে
অভিমানী চন্দ্র যখন মুখ লুকাতো মেঘের আঁচল তলে
যখন অন্ধকার হতো সারা পৃথিবী অমানিশার গ্রাসে
তখনও তুমি পাশেই ছিলে দুষ্টুমি আর অভিমান নিয়ে।
তুমি আমার পাশেই ছিলে বৈশাখীর রুদ্র ঝড়ে
আষাঢ়ের অঝোর ঝরার ক্ষণে বিশ্বাসী ছাতা হয়ে
গ্রীষ্মের দুপুরে ঝলসিত সূর্যের দাবদাহে ফাঁটা বাউন্ডেলের দুর্গম পথে
তুমি ছিলে সূর্যাস্তের গোধুলিতে রংধনু হয়ে।
কৃষ্ণচুড়া শোভিত ফাগুনে তুমি গান গেয়ে ছিলে বসন্ত বন্দনা করে
হেমন্তে তুমি প্রাচুর্য দিয়েছিলে ক্ষুদ্র হৃদয় জুড়ে
তুমি কেয়া কদম্বে শুভা দিয়েছিলে বর্ষার দিনে
শীতের রাতেও তুমি ছিলে উষ্ণতা হয়ে
তুমি ছিলে শুধু তুমি ছিলে গ্রীষ্ম কিংবা বসন্তের ক্ষণে।
প্রকৃতি তুমি জীবন দিয়েছিল উষর ধরণীতে
বাসযোগ্য করেছিলে ধরা গভীর ভালোবেসে
কিন্তু পেয়েছো তুমি লাঞ্চনা শুধু আমাদেরই ভুলে।
তোমার বুকে ছিদ্র করেছি ওজোন স্তর ভেঙ্গে
বিষ ঢেলেছি তোমার দেহে শিল্পায়নের ছলে
তুমি নির্বাক ছিলে গলে ডুবেছো লবণাক্ত জলে।
আজ জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস প্রাপ্ত এলনিনো লানিনোর প্রভাবে
অতিবেগুনির রাজ্য জয়ে শোষিত আমরা সকলে।
এসিড বৃষ্টি আসছে ধেঁয়ে, দাবানলে পুড়ছে সব
অনুর্বর হচ্ছে মাটি, থাকবে না কোন বসবাস।
প্রকৃতি প্রেমে না পড়লে ঘটবে আরও সর্বনাশ
ধরিত্রীকে বাচাঁতে মোরা এসো মিলাই দীপ্ত হাত।
কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগে এমএস বর্ষে অধ্যয়নরত