কলা উৎপাদন ও সরবরাহে ছারপোকা ও ছত্রাকের বিস্ময়কর সংক্রমন !!!
তানভীর হোসেন
সম্প্রতি গবেষকরা আবিষ্কার করলেন পৃথিবী জুড়ে কলার উৎপাদন ও সরবরাহের উপর ছারপোকা ও ছত্রাকের সংক্রমন একটি বিরাট হুমকীতে পরিনত হয়েছে। পৃথিবী জুড়ে ফল সরবরাহকারী প্রধান দেশসমুহের একটি কোস্টারিকার সরকার ইতিমধ্যে ঐ দেশের কলা উৎপাদনের উপর ‘ জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। মিলিবাগ ও স্কেল পতঙ্গের আক্রমণে সে দেশের অর্ধ বিলিয়ন ডলারের কলা রপ্তানি বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং কলার উৎপাদন ২০ শতাংশ কমে গেছে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের উদ্ভিদ স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ম্যাগডা গঞ্জালেজ টিকো টাইমসকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কীটপতঙ্গের সংখ্যা বৃদ্ধিকে তরান্বিত করেছে এবং সারা বিশ্বব্যাপী একে মহামারী রুপে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন “আমি প্রায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে এই পতঙ্গ বৃদ্ধির মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন”। পতঙ্গগুলো উদ্ভিদকে দূর্বল করে ফেলে এবং ফলের গায়ে ক্ষত দাগের সৃষ্টি করে, ফলে এমন ফল ফেলে দেওয়ায় তা খাবার যোগ্য ফলের ব্যাপক সংকট তৈরি করে। গঞ্জালেজ উল্লেখ করেন যে তারা রপ্তানি চুক্তি স্বাভাবিক রাখতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
এদিকে আমেরিকার এক বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন, বিভিন্ন ধরনের কলা ভক্ষনকারী ছত্রাকের ব্যাপারে সতর্ক করেছে যেগুলো সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী উদ্ভিদটির বৃদ্ধিতে আতংকরুপে পরিনত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, Fusarium oxysporum f. sp.cubense (Foc) নামক ছত্রাক দ্বারা উৎপন্ন রোগ পূর্বে এশিয়া ও অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশের কিছু নির্দিষ্ট অংশে দেখা যেতো যা সাম্প্রতিক সময়ে জর্ডান ও মোজাম্বিকেও দেখা যাচ্ছে। তানজানিয়ার দারেস সালামে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ট্রপিক্যাল এগ্রিকালচারের প্রজননবিদ রনি সোয়েনেন বলেন, “এটি একটি দৈববৎ সমস্যা”।
নেদারল্যান্ডের ওয়াগেনিঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ফুজারিয়াম গবেষক জার্ট কিমা প্রতিবেদনটি জর্ডানে পূর্ণপ্রকাশ করেন। তিনি আমেরিকান প্রতিবেদন প্রকাশনায় বলেন, “আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। নিকট ভবিষ্যতে ল্যাটিন আমেরিকাতেও যদি এটি ছড়িয়ে পড়ে আমি বিস্মিত হবো না”। গবেষকরা বলেন, ছারপোকার আক্রমন এবং FocTR4 স্ট্রেইনেরর প্রভাব সম্মিলিতভাবে পুরো ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ান অঞ্চলের কলা রপ্তানিতে বিরাট ব্যাঘাত ঘটাবে যা সারা পৃথিবীতে সরবরাহকৃত কলার ৮০ শতাংশ যোগান দেয়।