রাজনীতির নামে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড বন্ধ করা হোক: পবা

রাজনৈতিক সহিংসতায় পরিবেশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে নির্বিচারে রাস্তার পাশের বৃক্ষ কর্তন করা হচ্ছে। যা পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। পরিবেশবান্ধব পরিবহন রেলের উপর উপর্যুপরি হামলায় জনপ্রিয় এ মাধ্যমটি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বাসসহ গণপরিবহন পোড়ানোর মাধ্যমে যাত্রীদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও নানাভাবে পরিবেশের উপর আঘাত হানা হচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩, বিকাল ৪ টায় শাহবাগস্থ চারুকলা অনুষদের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান জানানো হয়। ।

সমাবেশ থেকে বক্তারা জানান, সস্প্রতি হরতাল ও অবরোধের সময় সারা দেশে সড়ক- মহাসড়ক বন্ধ করার জন্য হাজার হাজার গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। যে গাছগুলো হয়তো আগামী ২০ বছরেও আর পূন:স্থাপন করা সম্ভব হবে না। এর ফলে পরিবেশের যে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে তা আর আলোচনার অপেক্ষা রাখে না। সাম্প্রতিক বৃক্ষ নিধনে পরিবেশগত অর্থনৈতিক ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকার উপরে। দেশে ভূমির তুলনায় বন বা বৃক্ষের সংখ্যা যেখানে অনেক কম সেখানে এভাবে ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধন শুধু দায়িত্বহীনতাই নয় তা পরিবেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপরাধ হিসাবে আমাদের কাছে প্রতীয়মান। এ গাছগুলোর মালিক বন অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, এলজিইডি, জেলা পরিষদ, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসমূহ। এছাড়াও রয়েছে সামাজিক বনায়নের আওতাধীন গাছ। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ এগুলো পরিচর্যা করে এবং এর ফলমূল তারাই ভাগ করে নেয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর গাছগুলো বিক্রি করা হলে তারা এ গাছগুলোর অংশীদারিত্ব পায়। রাজনৈতিক সহিংসতায় গাছগুলো কাটার ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের দরিদ্র মানুষ এবং দীর্ঘমেয়াদে বিপন্ন হয়েছে পরিবেশ। গাছ আমাদের জাতীয় সম্পদ। আর এ সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব দেশের সর্বস্তরের জনগণের। প্রয়োজনে প্রত্যেক এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে গাছ ধ্বংসের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।P1010953

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলওয়ে একটি সুলভ ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন। দেশের রেল ব্যবস্থাকে উন্নত ও বিস্তৃত করতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) দীর্ঘদিন যাবত নিরলস আন্দোলন করে আসছে। এমনকি আমাদের দাবী ও আন্দোলনের ফলে রেলওয়ের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা লক্ষ্য করছি যে, সরকার বিরোধী আন্দোলনের নামে রেলওয়ের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য মতে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে চলতি মাসের রেলের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এই সম্পদ রাষ্ট্রের তথা জনগণের।

এ ছাড়া রাজনীতির নামে বিভিন্নভাবে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী প্রত্যাহার করতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন সমূহের কাছে জোরালো দাবী জানাচ্ছি। এবং ভবিষতেও যেন কোন দল আন্দোলনের নামে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মসূচি থেকে বিরত থাকে সে বিষয়েও সকল রাজনৈতিক দলকে অঙ্গীকার করার দাবী জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়না, কো-অর্ডিনেটর আতিক মোরশেদ, পরিবেশ কর্মী একেএম সেরাজুল ইসলাম, বিসিএইচআরডির নির্বাহী সম্পাদক মাহবুল হক, বাংলাদেশ রেল শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক মো: আবদুল মান্নান প্রমুখ।

এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics