ফাইলিনের আঘাতে লন্ডভন্ড ওডিশার উপকূল, নিহত ৭
ভারতের ওডিশার উপকূলে গতকাল শনিবার আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন। ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া এ ঘূর্ণিঝড়ে প্রাথমিক খবরে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে এবং সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল রাত সোয়া নয়টার দিকে ওডিশার গোপালপুরের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি। গত ১৪ বছরের মধ্যে এটাই ভারতে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। এর আগে ওডিশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সাত লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এলএস রাঠোরের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের মতো ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে তিন থেকে সাড়ে তিন মিটার উঁচু সামুদ্রিক ঢেউ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ে।
ঝড়ের প্রভাবে গতকাল বিকেল থেকেই উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বর্ষণ ও প্রবল বেগে হাওয়া বইতে থাকে। গাছপালা নুয়ে পড়ে। উপকূলে আছড়ে পড়ে বিশাল বিশাল ঢেউ।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকায় প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা হবে। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ভাইস চেয়ারম্যান মারি শশীধর রেড্ডি গতকাল নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঝড় উপকূলে আঘাত হানার আগে বিপুলসংখ্যক মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়। এদিকে ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানার আগেই এর প্রভাবে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়ায় গাছ উপড়ে পড়ে ও ভারী বর্ষণে মাটির ঘর ধসে ওডিশায় সাতজন নিহত হয়েছে।
ঝড়-পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায় ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার জন্য ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে ১৮টি হেলিকপ্টার, ১২টি বিমান এবং দুটি যুদ্ধজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঝড়ের কারণে ভুবনেশ্বরের বিজু পাটনায়েক আন্তর্জাতিক বিমান-বন্দরের ১০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। হাওড়া-বিশাখাপত্তম রুটে ৫৬টি ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়েছে। গতিপথ পাল্টে অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১৬টি ট্রেন।
এর আগে ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে ওডিশায় একটি সুপার সাইক্লোনের আঘাতে অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো (১৩/১০/২০১৩)