
সিলেটে জলাশয় ভরাট ও টিলা কেটে ৩৭ আবাসন প্রকল্প
দেবাশীষ দেবু সিলেট

বেলার তালিকায় থাকা অবৈধ আবাসন প্রকল্পগুলো হচ্ছে— হাইব্রিড সিটি, দেউলগ্রাম হাউজিং এস্টেট, আমিন গ্রুপের শ্যামলছায়া, শাহ সুন্দর, আর্ক রিয়েল এস্টেট (প্রা.) লিমিটেডের শাহপরান উপশহর, সুন্দরবন, সুরমা ভিউ মডেল সিটি, লতিফনগর, অপরূপা, রূপসী বাংলা, গ্রিন বাংলা মডেল টাউন, গ্রিন সিটি, ডায়নামিক ল্যান্ড লিমিটেড, সুরমা ভ্যালি, লেক ভিউ, আহমদ হাউজিং, রয়েল সিটি, ড্রিম সিটি, বোরহান উদ্দিন, মদিনা হাউজিং, সোনারগাঁও, লালমাটিয়া, শাহপরান গোল্ডেন সিটি, আল-বারাকা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, তপোবন, ডালিয়া, সুবর্ণগ্রাম, পড়শী, এয়ারপোর্ট সাইড হাউজিং প্রজেক্ট, রূপালী, লিটল লন্ডন হাউজিং প্রজেক্ট, নেছারা বাদ হাউজিং, কর্নার ভিউ, মার্লিন টাওয়ার, স্প্রিং টাওয়ার ও গার্ডেন টাওয়ার প্রকল্প।
বেলার সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহিদা আখতার এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সিলেটে যে কয়টি আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে তার অধিকাংশই অবৈধ। এ ধরনের আবাসন প্রকল্পের একটি তালিকা আমরা করেছি। এগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
বেলা সূত্রে জানা যায়, তালিকাভুক্ত এসব প্রকল্পের মধ্যে লতিফনগর, রূপসী বাংলা, গ্রিন সিটি, ডায়নামিক, লেক ভিউ ও শাহপরান গোল্ডেন সিটি আবাসন প্রকল্প জলাশয় ভরাট করে প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নেছারাবাদ হাউজিং ও ড্রিম সিটি পাহাড় বা টিলা কেটে, মদিনা হাউজিং কবরস্থানের জমি, রয়েল সিটি সরকারি খাল, বোরহানউদ্দিন ছড়া দখল করে প্রকল্পের কাজ চালাচ্ছে। তালিকার অন্য প্রকল্পগুলো ফসলি জমি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে। শুধু আর্ক রিয়েল এস্টেটের পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র রয়েছে ও রয়েল সিটি ছাড়পত্রের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে আর্ক রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনতাছির আলী বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন রয়েছে। জলাশয় ভরাট করে গড়ে উঠলে নিশ্চয়ই অনুমোদন মিলত না।’
সিলেট অ্যাপার্টমেন্ট অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট গ্রুপ (সারেগ) সূত্রে জানা যায়, তাদের সদস্যভুক্ত ৫৭টি আবাসন প্রকল্প রয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সারেগের নিবন্ধনের বাইরেও সিলেটে আবাসন ব্যবসায় সম্পৃক্ত রয়েছে শ’খানেক প্রতিষ্ঠান।
অবৈধ প্রকল্পের বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি হাছিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের সদস্যভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও পরিবেশ দূষণের অভিযোগ আমরা ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না পরিবেশ অধিদফতর। ড্রিম সিটি নামে একটি অবৈধ প্রকল্পের বিরুদ্ধে টিলা কাটার অভিযোগে নোটিস জারি করা হলে গত ৩ মার্চ পরিবেশ অধিদফতরের সিলেট কার্যালয়ে ভাংচুর চালায় ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
অধিদফতরের সিলেট বিভাগের পরিচালক এসএম ফজলুল করিম চৌধুরী জানান, পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে অপরিকল্পিত আবাসন প্রকল্পগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। পরিবেশ অধিদফতরের সব মামলা এ অফিসের কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে হয়। এ কাজটা পুলিশকে দিয়ে করাতে পারলে ভালো হতো। এছাড়া রয়েছেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা।
সুত্রঃ বণিক বার্তা ১১/০৪/২০১৩ইং