মহাসেন: তিন জেলায় নিহত ১২

ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী তিন জেলায় বৃহস্পতিবার অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

নিহতদের মধ্যে আটজনই বরগুনায়। অপর চারজনের দুজন ভোলায়; দুজন পটুয়াখালীতে।barguna-mahasen-pic-05_3467_0
ঝড়ে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা ও ঝালকাঠীর বিভিন্ন স্থানে বাধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বহু গ্রাম। ভেসে গেছে শত শত পুকুর ও মাছের ঘেরের মাছ। বিধ্বস্ত হয়েছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উঠতি বোরো ধান এবং কৃষিজাত ফসলের।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গত ১১ মে শনিবার ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে পরিণত হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের উপকূলে পৌঁছার আগে এর প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
আমাদের বরগুনা প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে বরগুনায় অন্তত আটজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস সমকালকে জানান, মহাসেনে জেলার বেতাগী উপজেলার রানীপুর গ্রামের সৈয়দ আলী (৭০) গাছ চাপায় ও বকুলতলী গ্রামের আবির (৬) বজ্রপাতের আতঙ্কে মারা গেছেন।
এছাড়া তালতলী উপজেলার ছোট আমখোলা গ্রামের চাঁন মিয়া (৬৫) আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে, আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামের এস এম আলী (৬৫), পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা গ্রামের হনুফা (২৬), বামনা উপজেলার জয়নগর গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৬০), শফিপুর গ্রামের মোশারেফ (৫৭) ঘূর্ণিঝড়ে গাছচাপায় মারা যান।
তিনি জানান, ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা লক্ষ্মীপুরা গ্রামের নাদিরা আক্তার ঝুমুর (২৬) আছাড় খেয়ে মারা গেছেন।
প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার সকালে উপকূলে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে জেলার ৬টি উপজেলায় ৪২টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছ-পালা। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের।
ভোলা প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে ভোলায় গাছের নিচে চাপা পড়ে দুইজন নিহত হয়েছে। এরা হলো- চরফ্যাশন উপজেলার পারভেজ (৫) এবং লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের কাশেম (৬৫)।
চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নূর ই আলম জানান, পারভেজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজবাড়ির উঠানে গাছচাপায় আহত হয়। দুপুরে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
লালমোহন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন সমকালকে জানান, ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের কাশেম (৬৫) সকাল ৮টার দিকে সাইক্লোন সেন্টারে যাওয়ার পথে গাছের চাপায় মারা যান।
ঝড়ে সকাল ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ৯ ইউনিয়নে কমপক্ষে ৫০টি ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চিড়া,মুড়ি ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, মহাসেনে জেলায় অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার সমকালকে জানান, ঝড়ে রিজিয়া বেগম (৫০) ও সিরাজ কবিরাজ (৭২) মারা গেছেন। রিজিয়া মারা গেছেন গাছচাপায়; সিরাজ কবিরাজ মারা যান আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে।
সূত্রঃ দৈনিক সমকাল

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics