ফেসবুকে জনপ্রিয় সেই ২৭ টি পরিবেশ সংগঠন ! পর্ব-১

সিফাত তাহজিবা

পরিবেশকে রক্ষা করার পূর্বশর্ত হলো পরিবেশ তথা প্রকৃতিকে ভালবাসতে জানতে হবে। প্রকৃতির মাঝে বাস করা ক্ষুদ্র পোকামাকড় থেকে শুরু করে প্রতিটি স্থলজ ও জলজ প্রাণীকে বেঁচে থাকার জন্য তাদের বাস্তুতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপ সঠিক রাখা জরুরি, আর তার জন্য পরিবেশের সুরক্ষায় মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বে প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের এই পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। পরিবেশের সবকয়টি জীবনকে সজীব রাখতে গড়ে তোলা হয়েছে কিছু সংগঠন।

শুধুমাত্র অফিসিয়াল পেইজের ‘লাইক’ সংখ্যার উপর ভিত্তি করে সম্প্রতি বহুল পরিচিত গণমাধ্যম ‘মাদার আর্থ নেটওয়ার্ক’ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে জনপ্রিয় ২৭টি পরিবেশ সংস্থার নাম প্রকাশ করেছে; যাদেরকে ‘ফেসবুক পরাশক্তি’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে!

পাঠক,আসুন জেনে নেই সেই ২৭টি পরিবেশ সংস্থা সম্পর্কে এবং জেনে ফেলি, কেমনই বা তাঁদের কাজের ব্যাপ্তি।

১. ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউ ডব্লিউ এফ):
1

৫ মিলিয়নের বেশি মানুষের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ডব্লিউ ডব্লিউ এফ, পূর্বে এটি ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড’ নামে পরিচিত ছিল। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৩০০ টি পরিবেশ বিষয়ক প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে এই সংস্থাটি। উল্লেখ্যযোগ্য ২টি প্রকল্প হলো – ‘গরিলা প্রকল্প’ এবং ‘টাইগার পপুলেশন’! এই সংস্থাটির অফিসিয়াল পেইজটি অন্যান্য সংগঠনের তুলনায় ফেসবুকে বেশ আধিপত্য বিস্তার করেছে।
বর্তমানে সংস্থাটি বহুল আলোচিত তথ্যচিত্র ‘প্লানেট আর্থ’ এর পরবর্তী সিক্যুয়ালের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

২. দ্যি ওয়াইল্ড ক্যাট সেঞ্চুয়ারি :

2
বাংলায় বলা যায় বনবিড়াল আশ্রয়স্থল! ১৯৯৯ সালে ব্যাক্তিগত অনুদানে গড়ে উঠা এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হলো বনবিড়াল থেকে শুরু করে বাঘ, সিংহ, চিতা, জাগুয়ার এসব পশুদের বিভিন্ন ধরনের উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা। বন্যপ্রাণীদের বন্দি করে রাখা এবং প্রদর্শনী শিল্পের বিরুদ্ধেও এটি কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি ৪০ একর জমির উপর প্রায় ১২০টি বন্যপ্রাণীদের আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছে। এর মধ্যে বেংগল টাইগার, আফ্রিকান সিংহ ও ববক্যাট প্রানীও রয়েছে। প্রাণীদের সুরক্ষার জন্য আশ্রয়স্থলটি সবার জন্য উন্মুক্ত নয়।

৩. গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশনালঃ
3
বিশ্বের ৪০টিরও অধিক দেশে গ্রিনপিসের অফিস রয়েছে; শুধু তাই নয় ১৫০০০ স্বেচ্ছাসেবক সহ কর্মী সংখ্যা প্রায় ২৪০০। ফেসবুকের জনপ্রিয়তায় শীর্ষ ৩ এ অবস্থান করা এই অলাভজনক সংস্থাটিকে সবচেয়ে সক্রিয় ও প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে গণ্য করা হয়।
বন রক্ষায় এমনকি তেল নিস্কাশন রোধ করে উত্তর মেরু রক্ষা করতে, গ্রিনপিসের প্রচারণায় যুক্ত কর্মীদের সৃষ্টিশীল এবং সাহসী শারীরিক কসরত সুপরিচিত।

৪. বিগ ক্যাট রেসকিউ :
4
১৯৯২ সালে গঠিত সংস্থাটি বর্তমানে বিগ ক্যাটদের বিশ্বের বৃহত্তম আশ্রয়স্থল বলা হয়। ফ্লোরিডায় ৬৭ একর জায়গার উপর গড়ে ঊঠা এই সংস্থায় ১১টি প্রজাতির প্রায় ১০০টিরও বেশি বাঘ, বনবিড়াল ও সিংহ রয়েছে। চিড়িয়াখানা ও সার্কাসে পশুদের অপব্যবহার ঠেকানোর জন্য সংস্থাটি বিখ্যাত।

৫ . সী শেফার্ড গ্লোবাল :
5
সামুদ্রিক জীবদের নিয়ে কাজ করা এই সংস্থাটি বিশ্বের কাছে পরিচিতি পেয়েছে; জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল ‘এনিমেল প্লানেট’ এ তিমিদের নিয়ে ‘ওয়েল ওয়ার্স – Whale Wars’ নামক তথ্যবহুল শো’টির মাধ্যমে। ‘নেপচুন্স নেভি’ হলো সংঠনটির নৌ বহর, যাতে প্রায় ৪টি জাহাজ অন্তর্ভুক্ত। সী শেফার্ডের বর্তমান প্রচারাভিযানগুলোর অন্যতম কয়েকটি হলো জাপানে ‘ডলফিন’ সংরক্ষণ, ফারো দ্বীপপুঞ্জে ‘পাইলট তিমি’ সংরক্ষণ, কোস্টারিকায় কচ্ছপ সংরক্ষণ এবং এন্টার্টিকায় ‘টুথফিস’ সংরক্ষণ’।

৬ . দ্যি নেচার কনজারভেন্সি :
6

১৯৫১ সাল থেকে মূলত ভূমি এবং পানির সুরক্ষায় নিয়োজিত সংগঠিনটি বিশ্বের প্রায় ১২০ মিলিয়ন একরের অধিক জমি এবং প্রায় ৫০০০ মাইল নদী সুরক্ষায় কাজ করে আসছে। বর্তমানে প্রায় ১০০টি সামুদ্রিক সংরক্ষণ বিষয়ক প্রকল্পে কাজ করছে এই সংস্থা। সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী কাজের মধ্যে একটি হল, তাঁরা ২০২৫ সালের মধ্যে ব্রাজিলের আটলান্টিক বনে গাছের চারা রোপণ করে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন একর বনভূমি পুনরুদ্ধারের প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং সেভাবেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

(চলবে…)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading