
উষ্ণতর মাটি থেকে পরিবেশে ছড়ায় অধিক পরিমানে কার্বন-ডাই-অক্সাইড; প্রভাব প্রশমিত হয় দীর্ঘ সময় ধরে
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে মাটির- আর এই উষ্ণ মাটি থেকে বের হওয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমান বেড়ে তা আবার বিশ্ব উষ্ণায়নকে করছে ত্বরান্বিত। সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকার বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি প্রকাশনা থেকে জানা গিয়েছে যে এই প্রভাব দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে প্রশমিত হয়ে যায়। ইউএনএইচ, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-ডেভিস আর ম্যারিন বায়োলজিক্যাল ল্যাবরেটরির গবেষকদের এ প্রকাশনা থেকে জানা যায় যে তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে মাটিতে বসবাসকারী অণুজীবদের আচরণের পরিবর্তনই অবস্থার এ অনুকূল পরিবর্তনে সাহায্য করে।
স্বাভাবিকভাবে প্রতি বছর মানবসৃষ্ট কারণে যে পরিমান কার্বন পরিবেশে মুক্ত হয়, তার প্রায় দশগুণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড আসে মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন অণুজীবের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থেকে। গবেষকগণ মূলত এসকল অণুজীবের বিপাকীয় কর্মদক্ষতা পরীক্ষা করেছেন। খাদ্য উৎস আর তাপমাত্রার ভিত্তিতে দুইটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে এদের কোষীয় ক্রিয়াকলাপ চালানোর দক্ষতার উপর গবেষণা করে তারা দেখেন যে স্বল্পমেয়াদী পরিসরে সবচেয়ে সহজলভ্য খাদ্য উপাদান গ্লুকোজের ব্যবহারে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না আসলেও ফেনলের মত জটিল খাদ্য উৎসের ব্যবহার প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যায়। ফলে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড মুক্তির হার বাড়ে।
কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে মাটির তাপমাত্রা সাধারনের তুলনায় প্রায় ৫ বাড়িয়ে ১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে যে এক্ষেত্রে দু’ধরণের খাদ্য উৎস ব্যবহারেই দক্ষতা বেড়ে যাচ্ছে আগের তুলনায়। ফলে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড মুক্তির হার তুলনামুলকভাবে কমে যাচ্ছে যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলে বরং ক্ষতির আশঙ্কা কমাতে কাজ করছে। তাপমাত্রার দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তনে প্রাপ্ত পুষ্টির পরিমান বৃদ্ধি ও অণুজীবের অভিযোজন – দুটোই এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন।