সাপ আর কুমির মারে যে ব্যাঙ !!!!
হুমায়রা হেদায়েত স্বর্ণা
সাপ ব্যাঙ মারে তাতো সকলের জানা। কিন্তু ঘটনা যদি উল্টো ঘটে তাতেই ঘটে বিপত্তি।ঠিকই পড়ছেন, ব্যাঙই সাপ মারে।! চিরদিন আমরা স্বচক্ষে যা দেখে আসছি তার উল্টো ঘটনা আজ আমাদের পড়তে হচ্ছে। আগে জানতাম ব্যাঙ সাপকে দেখলে দূরে পালানোর চেষ্টা করেছে। কারণ সাপের জীবনধারণের জন্য একটি অন্যতম খাবার হল ব্যাঙ।টিভি পর্দায় প্রায়ই আমরা দেখি কিভাবে একটি সাপ ব্যাঙকে গিলে খায়। কিন্তু ব্যাঙ সাপকে মারে এমন কথা শুনলে কেউ হয়তো বিশ্বাস করতে চাইবে না।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এমনি এক ধরনের ব্যাঙ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রজাতির ব্যাঙের নাম হল ‘ক্যান টোয়াড’ (cane toad)। এই ব্যাঙগুলো কোনো কোনো সাপের মৃত্যু ঘটিয়ে থাকে। এমনকি কুমিরও মরছে এদের কবলে পরে। বিস্ময়কর এই ব্যাঙগুলো পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়ায়। এদের দেহ জুড়ে শক্ত চামড়া, তার উপর আরো শক্ত শক্ত কাঁটার মতো আছে। মাথায় থাকে বিষের থলি। সাপ যখন এদের আক্রমণ করে তখন এরা সমস্ত শরীরে বিষ ছড়িয়ে দেয়। এতে ব্যাঙ তো মরেই, সাপের পক্ষেও বেঁচে থাকা সম্ভব হয় না। চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণাপত্র বলেছে, বিষাক্ত এই ব্যাঙগুলোর কারণে নাকি এক ধরনের কুমির বিলুপ্ত হবার পথে। কুমিরগুলো সাধারণ কুমিরের তুলনায় বেশ ছোট। পুরুষ কুমির ১ দশমিক সাত মিটার অর্থাৎ সাড়ে পাঁচ ফুট হয়। মেয়ে কুমির আরও ছোট হয় মাত্র দশমিক সাত মিটার অর্থাৎ দু’ফুট তিন ইঞ্চি। আকারে ছোট বলে এই ধরনের কুমির কে পিগমি বা স্টান্টেড ক্রোকোডাইল নামে ডাকেন বিজ্ঞানীরা। দুর্লভ প্রজাতির এই কুমিরের সংখ্যা অস্ট্রেলিয়ার কিছু কিছু জায়গায় খুব দ্রুত কমছে।
চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নর্দার্ন টেরিটরির ভিক্টোরিয়া এবং বুলো নদীর কুমির নিয়ে কাজ করে রীতিমতো শঙ্কিত। একটি এলাকায় ২০০৭ সালের শুরুর দিকে ছিল ২৮টি পিগমি কুমির। এক বছরের মধেই কমে হয়ে যায় ১০টি। এর বিশেষ কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। তবে লক্ষ করেছেন, ওই বিষাক্ত ব্যাঙের ঝাঁক আসার পর থেকেই কুমির কমেছে। ধারনা করা হচ্ছে বিকল্প খাদ্যের অভাবে ব্যাঙগুলো ধরে ধরে খায়, ব্যাঙের মাথায় বিষ কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের মৃত্যু ডেকে আনে। এই ব্যাঙগুলো নাকি পূর্ব-দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার দিকে এগুচ্ছে। তবে সুখবর হলো, এই প্রজাতির ব্যাঙের চলার গতি অনেক কম। এরা বছরে ৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারে। তাই বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
তথ্য সুত্রঃ অনলাইন।