সবুজের আহ্বান
বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে, গলে যাচ্ছে উত্তর মেরুর বরফ। পৃথিবীজুড়ে বাড়ছে কার্বন নিঃসরণ, পৃথিবীর পরিবেশ তাই হুমকির মুখে। এই যখন অবস্থা, তখন নাক ডুবিয়ে শুধু বইয়ের পড়া পড়লে কি চলে? নিশ্চয় চলে না। তরুণদেরও আছে দায়িত্ব। সে দায়িত্ব ভুলে গেলে চলবে কি? না, তরুণেরা তাঁদের দায়িত্ব ভুলে যাননি। তাই তো বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫ জন তরুণ শিক্ষার্থী এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫ জন তরুণ বসেছিলেন ঢাকার ধানমন্ডির কেনেডি সেন্টারে। ২৫ এপ্রিল সেখানে অনুষ্ঠিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট মিট’ বা আইওয়াইইএম। ওই সম্মেলনে তাঁরা আলোচনা করেন জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের করণীয়, জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আবাসন পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত ক্ষতি ও উত্তরণের উপায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয় নিয়ে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, এসব সম্মেলন করে পরিবেশের ক্ষতি ঠেকানো কি আদৌ সম্ভব? উত্তর দিয়েছেন সিলেট থেকে সম্মেলনে অংশ নেওয়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাইম। জান্নাত বলেন, আলোচনা বা সম্মেলনের মাধ্যমে হয়তো সরাসরি দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায় না, কিন্তু সংকট উত্তরণের পথ তো খুঁজে পাওয়া যায়।
এসব কথোপকথনের মাঝে যোগ দেন বুয়েটের শিক্ষার্থী সাদ আর রাফি। তিনি বলেন, ‘এ সম্মেলনটি ছিল পারস্পরিক যোগাযোগের দারুণ এক ক্ষেত্র। অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ বক্তাদের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। আইওয়াইইএম সম্মেলন জলবায়ু নিয়ে আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে।’
চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী জাওয়াদ হোসেন বলেন, ‘আমি এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে পরিবেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এখন মনে হচ্ছে, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।’
এই তরুণদের মতো নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এআইইউবির আলমির আহসান, এইউডব্লিউয়ের শারমিন মমতাজ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশিতা মৌরি রহমান, বুয়েটের ফাহরিন ইসলামসহ অনেকের কথাতেই ফুটে উঠল প্রায় একই সুর, ‘এই পৃথিবী আমাদের সকলের। একে সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের সকলের। সেই দায়িত্ব পালন করতেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি আমরা।’
এই সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা, উগান্ডার পানি ও পরিবেশমন্ত্রী মিশেল এস জি নাখলুভো, কেয়ার ফ্রান্সের কেভিন হেনরি, ইউএনডিপির ডেনিলা তারিজো, ইউএনইউ-ইএইচএসের কোকো ওয়ার্নার, রেড ক্রিসেন্ট ক্লাইমেট সেন্টারের পাবলো সুয়ারেজ, সেন্টার ফর গ্লোবাল চেঞ্জের আহসান উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের আতিক রহমান, ইউনিসেফের সারবজিৎ সিং সাহতা, ইউএনডিপি বাংলাদেশের দিলরুবা হায়দারসহ অনেকে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো (১২/০৫/২০১৩)