রাজকান্দি সংরক্ষিত বনে দুর্লভ পাখি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, শ্রীমঙ্গল

গাছের মধ্যে বেড়ে ওঠা লতাগুল্ম আর জলাশয়ের ধারের বাঁশঝাড়েই আবাস এ পাখিটির। ক্ষুদ্র এ পাখির নিভৃত বিচরণ চিরসবুজ বনের পাতার আড়ালে অথবা ঝোপঝাড়ের ফাঁকে। বাংলাদেশে বিচরণকারী পাখিদের তালিকায় এদের নাম গুরুত্বের সঙ্গে রেকর্ড করা হলেও এদের দেখা পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। সমপ্রতি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনে পাখি গবেষকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই পাখিটি।satare সায়েম ইউ চৌধুরী এবং তানিয়া খানের অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায় পাখিটিকে। পাখিটির নাম খয়রাবুক ছাতারে। ইংরেজি নাম Buff-breasted Babbler. বৈজ্ঞানিক নাম Pellorneum tickelli. এরা গায়ক পাখি হিসেবেই খ্যাত। শরীরের রং অনুজ্জ্বল জলপাই-বাদামি। এরা দৈর্ঘ্যে ১৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।
বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী সায়েম ইউ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে দুর্লভ বন্যপ্রাণী অনুসন্ধান করতে করতে হঠাৎ করেই পেয়ে যাই খয়রাবুক ছাতারে পাখিটিকে। জানা মতে, বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো এর ছবি তুলতে পেরেছি আমি।’ তিনি আরো বলেন, এক সময় লাউয়াছড়াসহ সিলেটের প্রায় সব বনেই এই দুর্লভ পাখিটির দেখা মিলত। কিন্তু বন ধ্বংসের কারণে অনেক পাখি হারিয়ে গেছে।
পাখিটি সম্পর্কে সায়েম বলেন, ‘স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ লাল হয়ে থাকে। চোখ লালচে বাদামি, পা কালচে বাদামি এবং ঠোঁট বাদামি ধূসর হয়। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে পোকা-মাকড়। মার্চ থেকে জুন এদের প্রজনন কাল। এককেটি খয়রাবুক ছাতারে পাখি তিন-চারটি করে ডিম পাড়ে। ডিমগুলোর রং ফিকে জলপাই।’
বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী তানিয়া খান বলেন, ‘আমাদের সংরক্ষিত বনগুলো যদি বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ে তবে মূল্যবান জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাবে। এসব পাখি টিকিয়ে রাখতে হলে জাতীয় উদ্যান ছাড়াও অন্য বনগুলো রক্ষায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।’
লেখক: দৈনিক কালের কণ্ঠের শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি।

লেখাটি প্রকাশের তারিখ ও গণমাধ্যমের নাম : ২৯ মার্চ ২০১৩, দৈনিক কালের কণ্ঠ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics