পবা'র প্রতিবাদ সমাবেশঃ আবাসনের নামে রাজউকের পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ কর ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

“পূর্বাচল নতুন শহর” প্রকল্পের নামে রাজউকের পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ কর ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আজ ২৬ আগস্ট ২০১৩, সোমবার, দুপুর ১২টায় গাজিপুরের বড়কাউ এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে বক্তারা উক্ত দাবী জানান।

সমাবেশে বক্তারা  গাজিপুরের বড়কাউ পাড়াবর্থা মৌজার বিশাল এলাকার বৃক্ষ কর্তন ও বনরাজি ধবংশ, আবাদি জমি বিনষ্ট এবং ড্রেজার দিয়ে বেপরোয়াভাবে নদী-খাল ভরাট করেএবং পরিবেশ আইন লঙ্ঘন ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজউকের পরিবেশ বিধবংশী এ ভয়ংকর প্রকল্পের নিন্দা জানান।তাঁরা বলেন, বিভিন্নভাবে রাজউক তার এ অবৈধ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার পায়তারা করছে। আবাদি জমি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় রাজউকের আবাসনের নামে এ খামখেয়ালিপনা অবিলম্বে বন্ধ করে পরিবেশ বিনাশী কার্যক্রমের সাথে জড়িত সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।DSC05121

নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সমন্বয়ক আতিক মোরশেদ, উত্তরখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: কামাল উদ্দিন, রায়েরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শাহজাহান সরকার, মো: মুজিবুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, খোরশেদ আলম। এছাড়া বড়কাউ পাড়াবর্থা এলাকার নারী পুরুষ সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।

পূর্বাচল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নামে রাজউক বরকাউ, পর্বতা, কালিকুঠিসহ বিশাল এলাকার জলাধার, পুকুর বিল খাল এবং নদীর বিভিন্ন অংশ বালি দ্বারা ভরাট করছে। লিচুর বাগান বুলড্রোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে গাছ মাটি চাপা দিয়েছে। আম জাম লিচু ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ বুলড্রোজার দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে, এলাকা হয়ে পড়ছে গাছশূন্য। অত্র এলাকায় আগে বানর, খরগোশ, মেছোবাঘ, সজারূ, সাপ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখিসহ জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ছিল। অথচ এখন দেখে বুঝারই উপায় নেই এখানে গাছপালা সমৃদ্ধ লোকালয় ছিল। এতো নিচু এলাকা ভরাট করা হয়েছে যে বিলের মাঝের বয়স্বী হিজল গাছের সম্পূর্ণটা বালি চাপা পড়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কেটে বিরান ভূমি করা হয়েছে। আগে যেখানে সূর্যের আলো পৌছাতো না এখন সেখানে দিগন্ত জোড়া খালি মাঠ।DSC05093

রাজউক এর ঠিকাদার কর্তৃক কৃষি জমি ভরাট, গাছ গাছালি কাটা এবং জলাধার নষ্ট হওয়ায় তারা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। তাদের বিভিন্ন ধরনের মামলা ও হুমকি দিয়ে বসত-বাড়ী থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকের বিরূদ্ধেই একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্তৃক হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নির্বিচারে গাছ কেটে, আবাদি জমিসহ নিচু জমি এবং জলাশয় ভরাট করে রাজউক পরিবেশ আইন লঙ্ঘন এবং মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের অবমাননা করেছে। সেই সাথে নিরিহ গ্রামবাসীকে ভয় দেখিয়ে তাদেরকে ভিটেমাটি ছাড়া করে অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।

জনসভা থেকে নিন্মোক্ত দাবী জানানো হয়-
১. রাজউক এর পরিবেশ বিধ্বংশী কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পূর্ণ বন্ধ করা।
২. পূর্বাচল প্রকল্পের নামে পরিবেশ বিধবংশী কর্মকান্ডের ক্ষতি নিরূপণ করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা।
৩. পূর্বাচল প্রকল্পের নামে এরূপ বিধবংশী এবং অমানবিক কর্মকান্ডের জড়িত রাজউকের কর্মকর্তাকে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করা।
৪. নিরীহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা নি:শর্তভাবে প্রত্যাহার করা।

এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক

২৬/০৮/২০১৩

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics