জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজন অধিক অর্থায়ন

দেশের বিশিষ্ট পরিবেশবাদী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা আরো বলিষ্ট ও জোরালো জলবায়ু কূটনীতির তাগিদ দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত ও দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর কোটি কোটি মানুষ ও জনপদ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিপন্ন। খাদ্য, পানি, জীবন-জীবিকা ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে। এই নাজুকতা কাটাতে প্রয়োজন জরুরি ও কার্যকর কার্যক্রমের দ্রুত বাস্তবায়ন। প্রয়োজন অধিকতর অর্থায়নের।
তারা অবিলম্বে জাতীয় জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাতিসংঘ জলবায়ু সনদের আওতায় ও অর্থায়নে এখনই এই পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করা জরুরি। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়ন শেষে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করতে হবে দেশের সব বিপন্ন জনপদে। এ জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থায়নের ব্যবস্থা এখন থেকেই রাখতে হবে যাতে বাস্তবায়ন বিলম্বিত না হয়।
rising-sea-levels-and-coa-007
এশিয়া-প্যাসিফিক পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম, বিশ্ব পানি সাংবাদিক ফোরাম ও বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের যৌথ উদ্যোগে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ পরামর্শ সভায় সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশবাদী ও পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন দেশের সবচে প্রবীণ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. রেজাউল করিম, ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ড. আজহারুল হক, সানোয়ার হোসেন, যুবদূত শাহ মিম রাফায়াত চৌধুরী, মৃনাল কৃঞ্চ রায়, হাসান হাফিজ ও শামীমা চৌধুরী।
ড. রেজাউল করিম বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ কার্বন নিঃসরন কমিয়ে প্রশমন করাই হচ্ছে সবচে বড় এডাপটেশন বা খাপ খাওয়ানো। জাতিসংঘ জলবায়ু সনদের অধীনে সকল অর্থায়নে এডাপটেশন ও মিটিগেশনে সমান বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন। কারণ এখন আর ছোট খাপ খাওয়ানো দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করা যাবে না। যা ব্যয় সাপেক্ষ। এজন্য প্রয়োজন অনেক বিনিয়োগের।”
কামরুল চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করেছে, জাতীয় অভিযোজন কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এগুলোর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক নেগোশিয়েশনের সর্ব শেষ চিত্র তুলে ধরে বলেন, জলাবায়ু গবেষণা জোরদার করা প্রয়োজন।”
ড. তিতুমীর বলেন, “বিশ্বের বহু প্রথাসিদ্ধ মানুষের কাছে বাংলাদেশ এক অবাক বিস্ময়। জলবায়ু বিজ্ঞান, গবেষণা এবং নেগোশিয়েশনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরো বলিষ্ট নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। প্রয়োজন জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ। প্রয়োজন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা। এডাপটেশন অর্থায়নের রূপরেখা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জলবায়ু সনদের আলোচনায় তুলে ধরা প্রয়োজন।”
ড. আজহার বলেন, “লবণ সহিষ্ণু, পানি সহিষ্ণু আর খরা সহিষ্ণু জাতের ধানের উদ্ভাবন ও চাষে আরো অর্থায়ন ও গবেষণা প্রয়োজন। কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।”
যুবদূত শাহ মিম রাফায়াত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় যুবকদের সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেন।
হাসান হাফিজ গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণে মিডিয়া সক্রিয়।
সানোয়ার হোসেন ব্যাপক জন অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, জলাবয়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কোনভাবেই বিদেশী ঋণ নেয়া যাবে না। বৈদেশিক অনুদান ও দেশজ অর্থায়নে আমাদেরকে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।
সূত্রঃ http://www.natunbarta.com/environment/

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics