ইবোলা প্রতিরোধে করণীয়

মোঃ সাইফুল ইসলাম

ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (EVD) অথবা ইবোলা হেমোরেজিক ফিভার (EHF) হল মানুষের ইবোলা ভাইরাস ঘটিত রোগ। সাধারণতঃ ভাইরাস সংক্রমণের ২-৩ সপ্তাহ (গড়ে ৮-১০ দিন) পর রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে। এই রোগের লক্ষণগুলো হল জ্বর, গলা ব্যথা, পেশী ব্যথা এবং মাথা ধরা। পরবর্তীতে তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, পেশী ব্যথা, ত্বকে দানা দানা ওঠা, মুখে ঘা এবং বমি ও ডায়রিয়া শুরু হয়। পরিশেষে লিভার ও কিডনীর কার্যক্ষমতা হ্রাস পেয়ে বিষক্রিয়ায় রোগী মারা যায়। এ রোগে শরীরের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক রক্তপাত শুরু হতে পারে।

ইবোলার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির সাথে সাথে এ নিয়ে শঙ্কাও বাড়ছে দ্রুত। পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দেশে ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫০০ লোক আক্রান্ত হয়েছে।এছাড়া গতকালই ইবোলা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৪০০০ ছাড়িয়েছে। ধারণা করা হয় Pteropodidae গোত্রের ফলখাদক বাদুড় (Fruit bat) এই ভাইরাসের পোষক। কিন্তু ভাইরাসটি অন্যান্য আক্রান্ত প্রাণী যেমন শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বানর, বন্য এনটিলপের (হরিণবিশেষ) দেহ নিঃসৃত তরলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন চিকিৎসা পদ্ধতি ও টিকা আবিষ্কার হয়নি। তাই এই রোগ মোকাবেলায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাই সর্বোত্তম পন্থা।

আসুন জেনে নেই কি কি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে: ইবোলা প্রতিরোধের জন্য আমাদের প্রথমেই ভাবতে হবে আমরা কি করবো আর কি করবো না।

যা করতে হবে:

১। খাবার আগে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

২। যথাযথ ভাবে খাবার রান্না করতে হবে। খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।caution ebola virus

৩। উপরোল্লিখিত রোগলক্ষণ বা লক্ষণসমূহ প্রকাশ পেলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।

৪। ইবোলা আক্রান্ত হলে যতদূর সম্ভব সবাইকে জানাতে হবে। তাছাড়াও এর ঝুঁকি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে।

৫। জরুরী সাহায্য প্রাপ্তির জন্য সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করবেন। যোগাযোগ সরাসরি কিংবা ফোন কলের মাধ্যমেও হতে পারে।

যা করবেন না:

১। ইবোলার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া ব্যক্তি কিংবা ইবোলার ফলে মৃত ব্যক্তিকে স্পর্শ করবেন না।

২। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় ও বিছানাপত্র স্পর্শ করবেন না।

৩। ইবোলা রোগ লক্ষণ বা লক্ষণসমূহ প্রকাশিত ব্যক্তির বমি, থুথু, রক্ত ও মল-মূত্র ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।

৪। বানর, এপ অথবা বেবুন নিয়ে খেলবেন না।

৫। বন্য প্রাণী-পাখির মাংস এবং বাদুড়ে খাওয়া ফলমূল খাবেন না।

লেখক- চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics