প্রাকৃতিক শোভায় সুশোভিত পারকি সমুদ্র সৈকত

লিসান আসিব খান

বাংলা অগ্রহায়ন মাসের শুরু থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত সময়টাহল ঘুরে বেড়াবার সময়। এসময় বাংলাদেশের প্রকৃতি থাকে খুবই সুন্দর মনোরম এবং উপভোগ্য। এ সময়টাতে বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্রের স্বভাব অনুযায়ী আবহাওয়াটা থাকে ঠান্ডা।থাকে না তেমন বৃষ্টি বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ। হালকা থেকে কনকনে শীত, হালকা থেকে ঘন কুয়াশা সব মিলিয়ে পুরো বাংলাদেশ এক অপরূপ মনোরম সৌন্দর্যের সাজ নেয়।এমন একটি পরিবেশ ও এমন একটি সুযোগ আপনি হেলায় হারাবেন কেন?lisun ka baccha

 ঘুরে বেড়ানোর শখ আছে যাদের তারা ইচ্ছে করলেই দেখে আসতে পারেন একটি মায়াবী ও রূপময়ী সমুদ্র সৈকত;পারকি সমুদ্র সৈকত।প্রাকৃতিক শোভায় সুশোভিত চট্টগ্রামে রয়েছে বহু দৃষ্টিনন্দন স্থান তার মধ্যে এটি অন্যতম। প্রতিদিন প্রতিক্ষণ এর রূপ পরিবর্তিত হয়। শীত-বর্ষা-বসন্ত-গ্রীস্ম প্রতিটি মৌসুমেই  সমুদ্র সৈকতের চেহারা পাল্টাতে থাকে।একটি চেহারার সাথে আরেকটি চেহারার কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রত্যুষে এক রকম তো মধ্যাহ্নে এর রূপ অন্য রকম। oi lisun

তাই তো দেশি-বিদেশি ভ্রমন পিপাসুদের পছন্দের স্পট হিসেবে সম্প্রতি বেশ আলোচিত হচ্ছে পারকি সমুদ্র সৈকত । ভোরের সূর্য কোমল আলো ছড়ায় পারকির চিক চিক বালুকণায়। এর চারদিকেই দিগন্ত-বিস্তৃত সাগরের অথৈ নীল জলরাশি আপনাকে প্রতিনিয়ত কাছে টানবে। অস্তগামী সূর্যের লালিমা তেমনি মায়া ঢালে নিভৃতের আঁধারে। দূর থেকে মনে হয় কোনো শিল্পীর হাতে আঁকা নিপুণ ছবি। প্রকৃতি যেন অকৃপণ হাতে উজাড় করে সৃষ্টি করেছে এ সৈকতটিকে ।

 আকৃতি বা বিশালতার দিক থেকে পতেঙ্গা বা কক্সবাজার সৈকতের মতো বিশাল না হলেও সৌন্দর্যের দিক থেকে পারকি কোনো অংশেই কম নয়। চট্টগ্রাম শহরের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সৈকতটি। চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি পার হলেই পারকি চর। চট্টগ্রাম শহর থেকে কর্ণফুলী নদীর যেকোনো প্রান্ত দিয়ে পারকি সৈকতে অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছানো যায় ।

২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর এর পর লাগান ঝাউ গাছ বর্তমানে সাগর পাড়কে  অপরূপ  সোভায় শোভিত করেছে । ঝাউ বাগান প্রকৃতি প্রেমীদের খুবই আকর্ষণ করে ।সমুদ্র সৈকতের সাথেই ঝাউবনের ছায়াতলে গড়ে উঠেছে খাবারের দোকানসহ অনেক দোকান-পাট।lisun halar po

দ্বীপের চারদিকেলাল কাকড়ার মিলন মেলা, সাম্পান নৌকা , জেলেদের সাগরের মাছ ধরারদৃশ্য দেখে স্বপ্নের দেশে হারিয়ে যেতে পারেন যে কেও ।দ্বীপে পা  দিয়েই বুঝতেপারবেন কেনইবাএকে বলা হয় সুন্দরের লীলাভূমি। ছোটো-বড়অজস্র লাল কাঁকড়া আপনাকে নিঃন্দেহেআকৃষ্টে করবে। সন্ধ্যার পর বন্দরের বহির্নোঙরে দাঁড়ানো বিশাল বিশাল জাহাজে আলোকসজ্জাও পর্যটকদের মন কাড়বে ।

 যারা সমুদ্রে ঘুরে বেড়াতে চান তাদের জন্য রয়েছে স্পীড-বোট ।সমুদ্র তীরেই ঘুড়ে বেরানোর জন্য সী-বাইক আর ঘোড়া। এজন্য অবশ্য আপনাকে ঘন্টাপ্রতি হিসেবে নির্দিষ্ট ভাড়া গুনতে হবে ।সৈকতের আরেকটি আকর্ষণ হল,ঝাউবন ঘেঁষে উত্তর দিক বরাবর হেঁটে গেলে দেখতে পাবেন বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলি নদীর মোহনা।

 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু উদ্বোধনের সময় পারকি সৈকতকে একটি আধুনিক সৈকত হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেন  । সাধারণ পর্যটকদের মতে, পারকি সৈকতের মতো নীরব পরিবেশে প্রকৃতি উপভোগের মতো চট্টগ্রামে আর কোনো স্থান নেই। একদিন পারকি হয়ে উঠবে চট্টগ্রামের অন্যতম একটি পর্যটন স্পট।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics