কীটনাশকের ব্যবহারঃ মৌমাছির উপর নেতিবাচক প্রভাব
সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত হয় যে কীটনাশকের অতি ব্যবহারে মৌমাছির প্রজাতিসমূহের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। গবেষকরা আশংকা করছেন মধু আহরন ও পরাগরেনু পরিবহনে আকারে ক্ষুদ্র মৌমাছির কার্যকারিতা কমে যাবে। যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা পরিক্ষাগার গবেষণায় দেখতে পেলেন প্যারাথাইরয়েড় কীটনাশক কর্মী মৌমাছির বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে এবং এদের ডিমের আকার ক্ষুদ্র করে। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের রয়েল হলওয়ের স্কুল অব বায়লজিক্যাল সায়েন্স শাখার গবেষক গেমা ব্যারন বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যে বড় মৌমাছি মধু আহরনে অধিক কার্যকর”। তিনি আরো বলেন, “আমাদের ফলাফলে প্রকাশিত হয় উক্ত কীটনাশকের প্রভাবে মোমাছির পাড়া ডিমের আকার ছোট হয়ে যায় যা খুবই উদ্বেগের বিষয় কারন কার্যকর কলোনী গঠনে কর্মী মৌমাছির আকার একটি মৌলীক উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং ক্ষুদ্রাকার মৌমাছি মধু আহরন ও পরাগায়নে তুলনামুলক কম দক্ষ”।
পাইরেথ্রয়েড় কীটনাশক সাধারনত ফুল উৎপাদনকারী শস্যে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়। গবেষণাটি প্রথমে মৌমাছির সম্পূর্ণ জীবনচক্রের উপর কীটনাশকের প্রভাব সম্পর্কে করা হয় যেখানে চার মাস ধরে মৌমাছি কলোনীর বৃদ্ধি পর্যবেক্ষন করা হয়। গবেষকরা অর্ধেক মৌমাছির উপর পাইরেথ্রয়েড় কীটনাশক ব্যবহার করে কলোনীর বৃদ্ধি পর্যবেক্ষন করেন এবং সেই সাথে মাইক্রো স্কেলে প্রতিটি মৌমাছির নিয়মিত ওজন নির্ণয় করেন। তারা উদ্ঘাটন করলেন যে, যেসকল কর্মী মৌমাছি দীর্ঘ সময় ধরে কীটনাশকের সংস্পর্শে ছিল সেগুলো বিশুদ্ধ মৌমাছির তুলনায় কম বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে।
হলওয়ে রয়াল গ্রুফের নেতৃত্বদানকারী অধ্যাপক মার্ক ব্রাউন বলেন, “আমাদের খাদ্য শৃংখলে মৌমাছি একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান এবং তাই মৌমাছির উপর পরিবেশে নিক্ষেপিত রাসায়নিক পদার্থের প্রভাব সম্পর্কে ধারনা থাকা আমাদের অতীব গুরুত্বপূর্ণ”। তিনি আরো বলেন, “আমাদের অবশ্যই কীটপতঙ্গের হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে হবে এবং সেই সাথে আমাদের এই নিশ্চয়তাও দিতে হবে যে এই প্রক্রিয়া যেন মৌমাছির উপর ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলতে পারে”।
তানভীর হোসেন
তথ্যসূত্রঃ দ্যা গার্ডিয়ান