সিভাসুতে দুগ্ধবতী গাভীর পরিপূর্ণ খাদ্য তালিকা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মোঃ সাইফুল ইসলাম

উন্নত জাতের দুধাল গাভীর ফিড ফরমুলেশন বা সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণ করা সম্ভব হলে দেশে দুধ উৎপাদনের মাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। একটি দুধাল গাভীর জন্য প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেড, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল ও পানির সংমিশ্রণে সুষম খাদ্য প্রয়োজন হবে ধানের খড় ৩ কেজি, জার্মান ঘাস ২০ দশমিক ২ কেজি, দানাদার খাদ্য ৫ কেজি। এ তালিকা অনুসরণ করলে দুধের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি খামারীগণও লাভবান হবেন।

সোমবার চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত জাতের দুধাল গাভীর ফিড ফরমুলেশন সংক্রান্ত দিনব্যাপী এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মশালায় চট্টগ্রামের ৪০ জন ডেইরি ফার্ম মালিক ও প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এস. মাহফুজুল বারি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি ও খামারীদের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে আরও উদ্যোগ গ্রহণ করতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে তিনি সংশি¬ষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ইতোপূর্বে গঠিত ফিড ফরমুলেশন কমিটির পক্ষ থেকে কর্মশালায় এ বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন এনিম্যাল সাইন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব ইমরান হোসেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক ডা. ফরহাদ হোসেন। উপস্থাপনায় বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ডেইরি ফার্মগুলোতে গবেষণা চালিয়ে ফিড ফরমুলেশন বা খাদ্য তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
feed formulation (2)
কর্মশালায় দুধাল গাভীর জন্য একটি পরিপূর্ণ খাদ্য তালিকা উপস্থাপন করা হয়। এতে দুধাল গাভীর দৈনন্দিন বিপাকীয় শক্তি ও প্রোটিনের চাহিদা নিরুপন এবং দুধ উৎপাদনে এর ভূমিকা প্রদর্শন করা হয়। উপস্থাপিত তথ্যে দেখানো হয়, একটি গাভীর জন্য প্রতিদিন মোট বিপাকীয় শক্তির প্রয়োজন ৯৭.৬ মেগাজুল এবং প্রতিদিন প্রোটিনের প্রয়োজন ১১৮৮ দশমিক ৭ গ্রাম।

এছাড়াও দুধাল গাভীর রাফেজ (ঘাস) জাতীয় খাদ্য মিশ্রণ, দানাদার খাদ্য মিশ্রণ, মিনারেল ও ভিটামিন মিশ্রণের পরিমাপ দেখানো হয়। উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী একটি দুধাল গাভীর জন্য প্রতিদিন খাদ্য প্রয়োজন হবে ধানের খড় ৩ কেজি, জার্মান ঘাস ২০ দশমিক ২ কেজি, দানাদার খাদ্য ৫ কেজি। তবে গর্ভবতী গাভীর জন্য অতিরিক্ত দানাদার খাবার প্রয়োজন হবে।

কর্মশালার এক পর্যায়ে উপস্থিত খামারীরা প্রদর্শিত তথ্য অনুসরণে স্ব স্ব খামারের জন্য একটি করে খাদ্য তালিকা তৈরী করে  দেখান।

মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ড. এম এ মতিন প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. সোমেন দেওয়ান, ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কবিরুল ইসলাম খান, সাবেক ডিন প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুদ্দিন, প্রফেসর ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র চন্দ, প্রফেসর গৌতম কুমার দেবনাথ, প্রফেসর ডা. রায়হান ফারুক, গবেষণা পরিচালক প্রফেসর ড. জুনায়েদ সিদ্দিকী, ভেটেরিনারি হাসপাতালের পরিচালক ড. ভজন চন্দ্র দাশ, বহিরাঙ্গন পরিচালক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর, এনিম্যাল সাইন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. হাসানুজ্জামান। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হাই, ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি জনাব ওমর ফারুক ও জনাব রকিবুর রহমান টুটুল, সাধারণ সম্পাদক জনাব মালিক মোহাম্মদ ওমর সহ এসোসিয়েশনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লেখক: চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics