মাছের ডাক্তারি!…
মহাসমুদ্রের পানির নিচে আছে বিস্ময়কর সুন্দর সব প্রবাল প্রাচীর। পানির নিচে সেই প্রবাল প্রাচীরের সামনে লাইন দিয়ে ঘোরাফেরা করে বিভিন্ন ধরনের মাছ। কোনোটা ঘুরে বেড়ায় শিকারের নেশায়, কোনোটা সোজা স্থির দাঁড়িয়ে সময় কাটায় আবার কোনোটা অস্বাভাবিক বর্ণছটা ছড়িয়ে ঘুরে বেড়ায়। যেভাবেই ওরা ঘুরে বেড়াক না কেন, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ কিন্তু একই। প্রত্যেকেই দাঁড়িয়ে থাকে চিকিৎসার জন্য! মাছেরা চিকিৎসার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে এটা শুনে অবাক হওয়ারই কথা, তাই না? তবে সত্যি সত্যিই কিন্তু মাছেরা চিকিৎসা নেয়, আর চিকিৎসার জন্য আছে ডাক্তার মাছ। কয়েক ধরনের মাছ ডাক্তারি করে। এদের মধ্যে কিন্তু চিংড়িও আছে।
প্রবাল প্রাচীরের ধারে কাছে ঘুরে বেড়ানো অন্য সব মাছের শরীরের ওপর আস্তানা গাড়া ‘পরজীবী’ বা ‘প্যারাসাইট’ এবং অন্যান্য ক্ষতিকর ময়লা পরিষ্কার করে দেয় ডাক্তার মাছ। কারণ মাছের সবচেয়ে বিপজ্জনক রোগের উদ্ভব হয় এসব পরজীবীর আক্রমণ থেকে। ডাক্তার মাছ চেনা যায় তাদের চোখ ধাঁধানো রঙ দেখে। চিকিৎসাকেন্দ্রের কাছে গিয়ে ডাক্তারদের দেখা পাওয়ার পর রোগে কাবু মাছ ডাক্তার মাছদের জানিয়ে দেয়, তারা চিকিৎসা প্রার্থী। চিকিৎসাপ্রার্থী মাছ পানির মধ্যে স্থির হয়ে ভেসে থেকে অথবা শরীরের আসল রঙের পরিবর্তন ঘটিয়ে এ কাজটি করে। মানুষের যেমন বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন, মাছের ক্ষেত্রেও ময়লা পরিষ্কারের ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসক আছে। ছুঁচালো মুখের চিকিৎসক মাছেরা রোগী মাছের আঁশের নিচে লুকিয়ে থাকা পরজীবী বা অন্য ধরনের ময়লা পরিষ্কার করে।
অন্যদিকে ক্ষুরের মতো ঠোঁটের চিকিৎসক মাছেরা রোগীর ত্বকের ওপর জড়িয়ে থাকা পরজীবীদের শেষ করতে দক্ষ। এই কাজের মাধ্যমে তাদের খাওয়ার কাজটাও হয়ে যায়।বেশিরভাগ চিকিৎসক মাছই কিন্তু তাদের এই চিকিৎসা সারাজীবন ধরে চালিয়ে যেতে পারে না। মানুষের মতো তাদেরও কর্মজীবন থেকে অবসর নিতে হয়।
তথ্যঃ ইন্টারনেট