মরুভুমির জাহাজ
মরুভূমির রুক্ষ প্রকৃতিতে টিকে থাকা বেশ কষ্টকর। কিছু প্রাণী আছে যারা এই রুক্ষ প্রকৃতিকে জয় করে সদর্পে টিকে আছে। এদের তালিকায় সবার আগে চলে আসে উটের নাম। উটের খাবার হলো ঘাস, মরুভূমির সবজি, গাছের পাতা গুল্প-কাঁটাসহ গাছের ডালপালাও উট খেয়ে ফেলে সানন্দে। দেহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য উটকে সফলভাবে মরুভূমির বুকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। ঈর্ষা করার মতো চোখের ঘন পাপড়ি ওর চোখকে রক্ষা করে বালির স্রোত থেকে। চোখের এই পাপড়িগুলো সানগল্গাসের মতো সূর্যকিরণের খোঁচা থেকে চোখকে বাঁচিয়ে দেয়। নাকের ফুটোটাও এমনভাবে তৈরি, সেটা যখন খুশি খোলা-বন্ধ করা যায়। কোনো প্রকার পানি বাইরের পরিবেশ থেকে না নিয়ে এরা এক সপ্তাহের বেশি টিকে থাকতে পারে। আর কয়েক মাস এরা অনায়াসেই কোনো খাবার গ্রহণ না করেই সচল থাকে। একবারে এরা ৩২ গ্যালন বা ৪৬ লিটার পর্যন্ত পানি খেয়ে ফেলতে পারে। উটের পিঠে যে কুঁজ দেখা যায় এটাই এদের শক্তির উৎস। চর্বির আকারে এ কুঁজে জীবনধারণের উপযোগী পুষ্টি জমিয়ে রাখতে পারে উট। উটের পিঠের এ কুঁজ তাকে প্রয়োজনমতো শক্তি সরবরাহ করে। অদম্য শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আদর করে উটকে ডাকা হয় ‘মরুভূমির জাহাজ’। এদের শরীরের তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে। এর ফলে উটের শরীর না ঘেমেই পরিবেশের বাড়তি তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। এ প্রক্রিয়া তাকে পানির অপচয় থেকে বাঁচিয়ে দেয়। উটের পুরু ঠোঁট তাকে মরুভূমির কাঁটাযুক্ত তৃণ খেতে সাহায্য করে। এদের কানের ভেতরটাও পুরু লোমে ভর্তি। ফলে মরুভূমির ধুলো থেকে শারীরিক বৈশিষ্ট্যই তাকে সব দিক থেকে রক্ষা করে। আর এদের লম্বা, বিস্তৃত পা মরুভূমিতে হাঁটার জন্য খুই উপযোগী।
সূত্রঃ ইন্টারনেট