বিস্ময়ের নায়াগ্রা জলপ্রপাত
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে অসংখ্য জলপ্রপাত। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং বিস্ময়কর জলপ্রপাতের অবস্থান উত্তর আমেরিকায়।দুটি ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এর হর্স শু ফলস্ পুরোটাই কানাডায় অবস্থিত। ১৭৩ ফুট উঁচু এবং ২ হাজার ২০০ ফুট চওড়া এই জলপ্রপাতের প্রবাহের গতি ঘণ্টায় প্রায় চল্লিশ মাইল। হর্স শু ফলস্ দিয়েই নায়াগ্রার নব্বই শতাংশ পানির পতন হয়। আমেরিকান ফলস্ এবং লুনা ফলস্’র পুরোটাই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। আমেরিকান ফলস্ উচ্চতায় ১৮২ ফুট ও চওড়ায় এক হাজার একশ’ ফুট। এই যুগ্ম জলপ্রপাতটি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে অবস্থিত।
লুনা আইল্যান্ড নামের এক চিলতে জমি দিয়ে এগুলো আলাদা।নায়াগ্রার পানি পতনের স্বাভাবিক গতি সেকেন্ডে দুই লাখ বারো হাজার ঘনফুট।নায়াগ্রায় পানি সজোরে পতিত হওয়ার কারণে প্রচণ্ড ফেনার সৃষ্টি হয়। প্রকৃতপক্ষে এই ফেনার দাবিদার ক্যালসিয়াম কার্বনেট। পানির শৈবালের সঙ্গে ক্যালসিয়াম কার্বনেট মিশ্রিত হয়ে নায়াগ্রার পাদদেশে সজোরে যখন পতিত হয় তখন তা ফেনার সৃষ্টি করে। কিছুদূর গিয়েই তা অবশ্য পানিতে মিশে যায়। গোধূলি লগ্নে এ ফেনার সৌন্দর্য মনে হয় অপরূপ-মায়াবী। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, নায়াগ্রার গতি দুই লাখ ঘনফুটের বেশি হওয়ার পরও তার পানি প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ১৯৪৮ সালের ২৯ মার্চ মধ্য রাত থেকে ৩০ মার্চ সকাল পর্যন্ত নায়াগ্রার পানির গতি অর্ধেকে নেমে আসে। নায়াগ্রার উৎসস্থলের দিকে লেক ইরির কাছে নায়াগ্রার নদীর মুখে বরফ জমতে শুরু হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ৩০ মার্চ পানি প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় চল্লিশ ঘণ্টার মতো প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এর ফলে নায়াগ্রা পানিশক্তির ওপর নির্ভরশীল কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। জলপ্রপাতের সম্মুখের নদীটি একেবারে শুকিয়ে যায়। নদীতে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং বিপাকে পড়ে নদীর মাছগুলো। অবশ্য পহেলা এপ্রিল প্রত্যুষে আবার প্রাণ ফিরে পায় নায়াগ্রা।
সূত্রঃ ইন্টারনেট