প্রাচীন উড়–ক্কু মাছ
পাখিদের মতো প্রাচীন উড়–ক্কু মাছ উড়তে পারতো। মাছ উড়তে পারে এটা সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার। সাগরের পানি থেকে লাফ দিয়ে পাখির মতোই দ্রুতগতিতে কিছুদূর উড়ে যায় উড়–ক্কু মাছ। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাগরে উড়–ক্কু মাছেরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে দীর্ঘদিন ধরে। পাখি ও ডাইনোসরদের আগে থেকেই এ মাছের অস্তিত্ব ছিল, এখনো রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ২৪ কোটি বছর আগে থেকেই সমুদ্রে রয়েছে কয়েক প্রজাতির উড়–ক্কু মাছ। চীনের জীবাশ্ম বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আকাশে পাখিদের ওড়ার আট কোটি বছর আগে থেকেই উড়–ক্কু মাছেদের রাজত্ব ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন উড়–ক্কু মাছটি ২৪ কোটি বছর আগে সমুদ্র থেকে লাফিয়ে উঠেছিল শিকার হওয়া থেকে বাঁচার জন্য। সম্প্রতি চীনের জাদুঘরে সংরক্ষিত একটি উড়–ক্কু মাছের জীবাশ্ম গবেষণা করে এ তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা। এ প্রসঙ্গে এক খবরে জানা যায় আগে গবেষকদের ধারণা ছিল, উড়–ক্কু মাছের প্রজাতি বড়জোর সাড়ে ছয় কোটি বছরের পুরনো হতে পারে। কারণ, এ সময়ের আগের কোনো উড়–ক্কু মাছের জীবাশ্ম তাদের কাছে ছিল না। সম্প্রতি চীনের জাদুঘরে থাকা উড়–ক্কু মাছের ফসিল বা জীবাশ্ম গবেষণায় তারা দেখেছেন, ২৩ কোটি থেকে ২৪ কোটি বছর আগের মধ্য ট্রায়াসিক যুগে ‘পোটানিক্সাস কিংজিনসাস’ নামের উড়–ক্কু মাছের প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল যা, জুরাসিক যুগের ডাইনোসরদের থেকেও পাঁচ কোটি বছর আগেকার। প্রসিডিংস অব দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধে গবেষকরা জানিয়েছেন, সবচেয়ে প্রাচীন উড়–ক্কু মাছের জীবাশ্ম হিসেবে এর আগে ইউরোপে খোঁজ পাওয়া জীবাশ্মের তুলনায় ‘পোটানিক্সাস কিংজিনসাস’ প্রজাতির উড়–ক্কু মাছের জীবাশ্ম ২ কোটি ৭০ লাখ বছরের পুরনো। গবেষক ও নিবন্ধের লেখক গুয়ান হুই জু উড়–ক্কু মাছের প্রাচীন প্রজাতি সম্পর্কে জানিয়েছেন, মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে ওড়ার দিক থেকে সবচেয়ে প্রাচীন প্রাণীর প্রমাণ হচ্ছে ‘পোটানিক্সাস কিংজিনসাস’। ‘পোটানিক্সাস কিংজিনসাস’ অর্থ হচ্ছে ‘কিংজিংয়ের পাখাওয়ালা মাছ’। ২০০৯ সালে চীনের কিংজিং শহর থেকে এ প্রজাতির মাছের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন গবেষকরা।
জুনায়েদ তানভীর