এবার বাঁশের তৈরি সাইকেল
দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং ওজনের সঙ্গে শক্তির অনুপাতে সামঞ্জস্যের কারণে বাঁশের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। ঘরবাড়ি ও আসবাব তৈরিতে যুগ যুগ ধরে ব্যবহূত হচ্ছে এই উদ্ভিদ। বাঁশ দিয়েই এবার তৈরি হচ্ছে দুই চাকার সাইকেল। জার্মানির বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওজোন সাইক্লেরির নকশাকার ড্যান ভোগেল-এসেক্স ও স্টেফান ব্রুনিং তৈরি করেছেন এই সাইকেল।
ভোগেল-অ্যাসেক্স বলেন, প্রকৃতির বিস্ময়কর সৃষ্টি বাঁশ টেকসই ও হালকা। পাশাপাশি কম্পন শোষণক্ষমতার কারণেই সাইকেলের কাঠামো তৈরির অনন্য একটি উপাদান এটি। ইস্পাত ও অন্যান্য ধাতুর চেয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিমাপে বাঁশ কাটা অনেক সহজ। এই কাঠামোর বাইরে অন্য অংশ, যেমন টায়ার, ব্রেক, চেইন, প্যাডল ইত্যাদি সাধারণ সাইকেলের মতোই হবে।
ব্রুনিং বলেন, তিন বছর আগে তাঁরা বাঁশের সাইকেল তৈরির উদ্যোগ নেন। এ ব্যাপারে কোনো তথ্যই তখন ইন্টারনেট বা অন্য কোথাও ছিল না। তাই নিজ উদ্যোগে তাঁরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাঁশের সাইকেলের কার্যকর নকশা তৈরি করেন। পাহাড় ও সমতলে ভ্রমণ বা প্রতিযোগিতার উপযোগী সাইকেলের কাঠামো তৈরি করা এখন সম্ভব হয়েছে। এই কাঠামো খুবই হালকা। ওজন মাত্র ১ দশমিক ৭৫ কেজি।
ওজোন সাইক্লেরি জানায়, বাঁশের কাঠামো তৈরির বিভিন্ন পর্যায়ে প্রয়োজন করাত, সিরিশ কাগজ, আঠা, প্রাকৃতিক তন্তুর কাপড় প্রভৃতি। প্রথমে বাঁশের চোঙা আকৃতির টুকরা নেওয়া হয়। বাঁশটির ব্যাস ৪০ থেকে ৭০ মিলিমিটার হলে সবচেয়ে ভালো। করাত দিয়ে কেটে বাঁশ থেকে তৈরি প্রয়োজনীয় মাপের কয়েকটি টুকরাকে আঠা ও কাপড় দিয়ে জোড়া দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে ধাতব কাঠামোও ব্যবহার করা যেতে পারে। এভাবে প্রতিটি কাঠামো তৈরিতে ৩০ থেকে ৪০ ঘণ্টা লেগে যায়। কাঠামো পরবর্তী সময়ে ফেটে গেলেও আঠা দিয়ে মেরামত করা যাবে। আর কাঠামো পরিবর্তনের কাজটি সাইকেলের চাকার পাংচার সারাইয়ের চেয়েও সোজা।
বাঁশের তৈরি সাইকেল আকর্ষণীয় ও স্বাচ্ছন্দ্য হওয়ায় ইতিমধ্যেই এটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ঘানা, জাম্বিয়া ও সিঙ্গাপুরে ইতিমধ্যে সীমিত আকারে বাঁশের সাইকেল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডয়চে ভেলে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো(০৯/০৫/২০১৩)