দোয়েল পাখি

8430506522_92c8cfc0e5_zদোয়েল প্যাসেরিফরম অর্থাৎ চড়াই-প্রতিম বর্গের অন্তর্গত একটি পাখি। বাংলাদেশ ও ভারতের জনবসতির আশেপাশে দেখতে পাওয়া ছোট পাখিদের মধ্যে দোয়েল অন্যতম। মিষ্টি সুরে ডাকাডাকির জন্য দোয়েল সুপরিচিত। অস্থির এ পাখিরা সর্বদা গাছের ডালে বা মাটিতে লাফিয়ে বেড়ায় খাবারের খোঁজে। কীট-পতঙ্গ, ছোট ছোট শুঁয়ো পোকা এদের প্রধান খাদ্য। কখনো কখনো সন্ধ্যার আগে আগে এরা খাবারের খোঁজে বের হয়। পুরুষ দোয়েল স্ত্রী দোয়েলকে আকৃষ্ট করার জন্য মিষ্টি সুরে ডাকাডাকি করে। তবে স্ত্রী দোয়েলও পুরুষ দোয়েলের উপস্থিতিতে ডাকতে পারে। অত্যন্ত আকর্ষণীয় এই পাখিটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। নাতিশীতোষ্ণ দক্ষিণ এশিয়ায় মূলত : বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, চীনের দক্ষিণাঞ্চল ও ফিলিপাইনে এদের পাওয়া যায়। সাধারণত কাঠসমৃদ্ধ বন, চাষাবাদকৃত জমির আশেপাশে ও জনবসতিতে মানুষের কাছাকাছি এদের দেখতে পাওয়া যায়। দোয়েল আকারে ১৫-২০ সেন্টিমিটার বা ৭-৮ ইঞ্চি লম্বা। এর লম্বা লেজ আছে যা অধিকাংশ সময় খাড়া করে রাখে। পুরুষ দোয়েলের শরীরের উপরিভাগ ও গলার নিচে কালো রঙের, পেট সাদা। ডানার দুই পাশে সাদা রঙের প্যাঁচ আছে। স্ত্রী দোয়েলের উপরিভাগ ও গলার নিচে ছাই-রঙা হয়। পেটের অংশ পুরুষ দোয়েলের মতো উজ্জ্বল নয়, বরং কিছুটা ফিকে সাদা। দক্ষিণ এশিয়ায় এদের প্রজননকাল মার্চ থেকে জুলাই; আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জানুয়ারি থেকে জুলাই। প্রজনন সময় পুরুষ দোয়েলের শরীরের রঙ উজ্জ্বলতর হয়। গাছের ডালে বসে স্ত্রী দোয়েলকে আকৃষ্ট করার জন্য হরেকরকম সুরে ডাকাডাকি করে। ডিম দেয়ার এক সপ্তাহ আগে এরা গাছের কোটরে বা ছাদের কার্ণিশে বাসা বানায়। সাধারণত ৪/৫টি ডিম দেয়। ডিমের রং ফিকে নীলচে-সবুজ, তার উপর বাদামী ছোপ থাকে। স্ত্রী দোয়েল ডিমে তা দেয়; ৮ থেকে ১৪ দিন পরে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। প্রজননকালে পুরুষ দোয়েল আগ্রাসী হয়ে ওঠে। তখন বাসার আশেপাশে অন্য পাখিদের আসতে দেয়না।

জুনায়েদ তানভীর ১৬/০৭/২০১৩

আরো দেখান

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics