সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষা করে হেগফিশ
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ সমুদ্রকে ব্যবহার করে আসছে নানা প্রয়োজনে। এর বুকে ভাসিয়েছে নৌযান। নির্মাণ করেছে নৌবন্দর। গড়ে উঠেছে এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভাবের আদান-প্রদান। কিন্তু সামুদ্রিক পরিবেশ আজ মোটেও ভালো নেই। দূষিত বর্জ্যে ভরে উঠেছে। এর প্রভাবে মারা যাচ্ছে অসংখ্য প্রাণী। তবে বিশাল জলরাশি পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুদায়িত্ব পালন করছে সামুদ্রিক কিছু মাছ। এমন একটি মাছের নাম হেগফিশ। প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে এই মাছটির আবাসভূমি। প্রাণিবিজ্ঞানীরা চোয়ালহীন এ মাছটিকে সাধারণত পেলিওজিক সময়ের প্রাণী বলে মনে করেন। মাছটি দেখতে অনেকটাই আমাদের দেশের বাইন মাছের মতো। শরীর এতই পিচ্ছিল যে, শত্রু যত ভয়ঙ্করই হোক, খুব সহজে বাগে আনতে পারে না। যে কোনো ধরনের উত্তেজনার সময় মাছটির শরীর থেকে নির্গত হয় এক ধরনের আঠালো পদার্থ। বিজ্ঞানীরা মাছটি নিয়ে গবেষণা করে বলছেন, এটির শরীর থেকে যে নিঃসৃত আঠালো পদার্থ বের হয়, মাত্র একশ’ মিনিটের কিছু কম সময়ে তা দিয়ে একটি পিপা ভরানো সম্ভব। খাদ্যপ্রাণের মাত্রা বেশি থাকায় মৎস্যশিল্পে মাছটির ভূমিকা ক্রমে বেড়ে চলছে। সুস্বাস্থ্য ও আর্থিক লাভের কথা মাথায় রেখে অনেকেই এ মাছ চাষের উদ্যোগ নিচ্ছে। কোরিয়া ও এশিয়ার কিছু দেশে হেগফিশ ও এর ডিম খাবার হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পিচ্ছিল হলেও বিশ্বের অনেক দেশেই হেগফিশের চামড়ার কদর রয়েছে। বিশেষ করে আমেরিকানদের কাছে এ চামড়ার কদর অনেক বেশি। তবে হেগফিশ খুব সুযোগসন্ধানী একটি মাছ। সাধারণত পচা বা গলিত জীবজন্তু ও প্রাণীগুলোর নাড়িভুঁড়ি মাছটির প্রিয় খাবার। এ কারণে প্রাণীটিকে খাবার খুঁজতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় না। মৃৃতপ্রাণী উদরপূর্তির মধ্যদিয়েই মাছটি বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে রাশ টেনে ধরছে। নাইট্রোজেন, কার্বন ও ফসফরাস জাতীয় পদার্থ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করছে। এ জন্য হেগফিশকে পরিবেশবান্ধব প্রাণীও বলা হয়ে থাকে।
তথ্যঃ ইন্টারনেট