সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান

গত ১৭ ডিসেম্বর পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এবং নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এম.পি এর নেতৃত্বে শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘটের হুমকির মুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্ত ব্যতিরেকে ৩০২ ধারায় সড়ক দূর্ঘটনার মামলা গ্রহণ না করা, পূর্বতন মামলাসমূহ প্রত্যাহার করা এবং ভবিষ্যতে ৩০৪ ধারা মোতাবেক সড়ক দূর্ঘটনাজনিত মামলা পরিচালিত হবে বলে প্রতিশ্রতিবদ্ধ হোন। সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি করবে-যা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ পরিবারবর্গ (ফুয়ারা), সাইফ ফাউন্ডেশন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ প্রেস এন্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এর সম্মিলিত উদ্যোগে ”দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দায়িত্বহীন প্রতিশ্রতি সড়ক দূর্ঘটনা বৃদ্ধি করবে” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কর্মরত মানবাধিকার সংগঠন, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র, চাকুরীজীবী, বিভিন্ন পেশাজীবী এবং সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ সমর্থন জানান।P1000047

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ফুয়ারা’র আহ্বায়ক ইকরাম। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সংসদ সদস্য তারানা হালিম, সাইফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সামিয়া হালিম, নাগরিক সংরক্ষণ অধিকার ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ রহমান।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মালিক, শ্রমিক, চালক আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। দূঘটনায় তারও নিহত বা আহত হন। তাদের পরিবারও আমাদের মত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সবার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে অবশ্যই আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। নীতি নির্ধারকদের বক্তব্য যানবাহনের মত বেপরোয়া না হওয়া বাঞ্ছনীয়।

সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তি এবং সচেতন সমাজে উদ্বিগ্নতার জন্ম দিয়েছে। এ ধরনের প্রতিশ্র“তি পরিবহন শ্রমিকদের আরো বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য প্রভাবিত করবে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দায়িত্বহীন প্রতিশ্রতি সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি করবে-যা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি যদি মনে করেন গণমাধ্যমগুলিতে তাঁর বক্তব্য পরিস্কারভাবে প্রকাশিত হয় নি। তাহলে আমরা তাঁর কাছে বক্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি। তা না হলে আমরা নিরাপদে যাতায়াতের জন্য লাগাতার কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হব।

আবু নাসের খান বলেন, একটি গোষ্ঠীর চাপের মুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত হানবে। শ্রমিক এবং অপরাধীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তিনি বলেন, অবশ্যই অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রাখা প্রয়োজন। বিশেষ করে গাড়ি চালানোর নামে যারা অপরাধ করে তাদের প্রকৃত বিচারের আওতায় আনা হলে তবেই সড়ক দূর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব।

ইকরাম আহমেদ স্বরাট্রমন্ত্রী কর্তৃক ৩০৪ ধারায় সড়ক দূর্ঘটনাজনিত মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে নেতিবাচক দিক তুলে ধরে বলনে, পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখা যায় উক্ত ধারার (খ) অনুযায়ী জামিনের সুযোগ থাকায় অপরাধীরা অধিকাংশ সময়ই শাস্তি এড়িয়ে যায়। এছাড়া মামলা প্রত্যাহার করা তাঁর কাজ নয়, এটি আদালতের এখতিয়ার। আমরা সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।

এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics