শেরপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে বাদাম চাষ
শেরপুরের কৃষকরা বাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন। উৎপাদন খরচ কম, ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে এ ফসলটির চাষ।
জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার খড়িয়া, কেকের চর, কাজির চর, উত্তর খড়িয়া ও দক্ষিণ খড়িয়া গ্রামের কৃষকরা কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষে ঝুঁকছেন। যদিও জেলার নকলা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বাদাম চাষ হয়ে থাকে।
একসময় শেরপুরের সদর উপজেলার কামারের চর, চরপক্ষিমারী, চর শেরপুর, চর মুচারিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপক বাদামের চাষ করা হতো। কিন্তু বন্যাসহ নানা প্রকৃতিক দুর্যোগ ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ওইসব এলাকার কৃষকরা ধীরে ধীরে বাদাম চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
তবে বর্তমানে কৃষি বিভাগ যদি ওইসব এলাকায় পুনরায় বাদাম চাষে কৃষকদের উত্সাহ ও প্রদর্শনী ব্লক তৈরি করে, তাহলে নতুন করে বাদাম চাষে আগ্রহ সৃষ্টি করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে অনেকে মনে করছেন।
এসব জেলায় এবার বাদাম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৭৮ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১৮০ হেক্টরে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৫ হেক্টর, নকলায় ১২০, শ্রীবর্দীতে ৩৩ ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়। বাদাম উত্তোলন এখন প্রায় শেষের দিকে।
শ্রীবর্দী উপজেলার উত্তর খড়িয়া গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন জানান, এবার প্রতি কাঠায় বাদামের ফলন হয়েছে ১ মণেরও বেশি আর খরচ হয় ১ হাজার টাকা করে। বাজারদর হিসেবে প্রায় দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে। জেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ ও বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করলে আরো ভালো ফলন হতো।
দক্ষিণ খড়িয়া গ্রামের কৃষক আফাজ উদ্দিন মণ্ডল জানান, এ গ্রামে অনেক পতিত জমি রয়েছে। ওইসব জমিতে বাদামের ভালো ফলন হয়। সরকারি সহযোগিতা পেলে এসব জমিতে বাদাম চাষ করে আরো লাভবান হওয়া সম্ভব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুভাষ দেবনাথ বলেন, এবার বিভিন্ন উপজেলায় বাদামের ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে বাদাম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে।
আগামী বছর ‘এনএটিপি’ প্রকল্পের আওতায় বাদামচাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এছাড়া বাদামসহ তেলজাতীয় বিভিন্ন ফসলের জন্য সরকার চার ভাগ সুদে কৃষিঋণের ব্যবস্থা করেছে।
এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার সর্বত্র প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যাতে বাদামচাষীরা কৃষি ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে বাদামসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে পারেন। যাতে করে দেশে মসলাজাতীয় ফসলের আমদানির পরিমাণ কমে আসে।
সূত্রঃ বণিক বার্তা ১৯/০৬/২০১৩