মৌলভীবাজারে আনারস কাঁঠালের ভালো ফলন
মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে আনারস ও কাঁঠালের জমজমাট ব্যবসা চলছে। জেলার পাহাড়ি এলাকায় এবার কাঁঠাল ও আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে পাইকাররা ভারত থেকে চোরাই পথে কাঁঠাল আমদানি করা থেকে বিরত রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার সদরের শহর ও গ্রামঞ্চলের প্রতিটি হাটবাজার এখন মৌসুমি ফল আনারস ও কাঁঠালে ভর্তি। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল শহরে রয়েছে মৌসুমি ফলের পাইকারি বাজার।
পাইকারদের মতে, মৌলভীবাজার তথা শ্রীমঙ্গলের কাঁঠাল ও আনারসের চাহিদা বেশি এবং তাতে লাভের পরিমাণও বেশি। তাই তারা এখান থেকে কাঁঠাল ও আনারস স্বল্পমূল্যে খরিদ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে মোটামুটি লাভবান হচ্ছেন।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৪২ একরে আনারস, শ্রীমঙ্গলে ১ হাজার ২০০, রাজনগর উপজেলায় ৪০, কমলগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ৪০০, কুলাউড়া উপজেলায় ৫, বড়লেখা উপজেলায় ৭৪ ও জুড়ি উপজেলায় ১৩৮ একর জমিতে আনারসের আবাদ হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন জাতের আনারস জন্মালেও শ্রীমঙ্গলের আনারসের জুড়ি নেই। শ্রীমঙ্গলের উৎপাদিত কাঁঠাল মৌলভীবাজার, শেরপুর, মোকামবাজার, সরকার বাজার, তাজপুর, বিয়ানিবাজার, সিলেট, চট্টগ্রাম, বগুড়া, কুমিল্লা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ট্রাকভর্তি করে পাইকারি ক্রেতারা নিয়ে যাচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলের পাশাপাশি চা বাগানের অব্যবহূত জমিতে প্রচুর পরিমাণে আনারস চাষ করা হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় এখানে বাণিজ্যিকভাবে আনারসের বাগান গড়ে উঠেছে। এসব বাগানে সারা বছরই আনারস উৎপাদিত হয়। তবে মৌসুমে অর্থাত্ গ্রীষ্মকালে এর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তখন বড় বড় আকারের আনারস পাওয়া যায়।
এছাড়া এখানে কাঁঠালের অনেক বাগান গড়ে উঠেছে। কৃষিবিদদের মতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার মৌলভীবাজারে কাঁঠাল ও আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগানমালিকরা জানান, এবার ফলন ভালো হওয়ায় গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই তারা কাঁঠাল ও আনারস বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছেন এবং তা আরো দুই মাস অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন চা বাগানে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে। এমনকি শহর ও গ্রামাঞ্চলের বাসাবাড়িতেও এবার কাঁঠালের ফলন ভালো হয়েছে। তবে হ্রাস পেয়েছে আম উৎপাদন। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার আমের ফলন ভালো হয়নি।
শ্রীমঙ্গলের পাইকারি ফলের বাজার ঘুরে জানা গেছে, এ বছর গ্রীষ্মকালের শুরু থেকেই প্রচুর কাঁঠাল ও আনারস আসতে শুরু করেছে। যত দিন যাচ্ছে, সরবরাহ তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের পুরান বাজার ও নতুন বাজার এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল ও আনারস বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে আকারভেদে ১০ থেকে ২০০ টাকায় প্রতিটি কাঁঠাল ও ৬০ থেকে ৮০ টাকায় এক হালি আনারস পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্রঃ বণিক বার্তা ১৪/০৬/২০১৩