মহাসেন আসছে ; ৮ নম্বর বিপদ সংকেত
বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূনিঝড় ‘মহাসেন’ এটি উপকূল থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে।এটি পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় স্থির অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রামের কাছ দিয়ে পটুয়াখালী (খেপুপাড়া)-টেকনাফ উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
‘মহাসেন’ মোকাবেলার অংশ হিসেবে দুর্গতদের চিকিৎসাসেবায় ১৩টি উপকূলীয় জেলায় এক হাজার ৩২৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। এছাড়া দুই হাজার ৯৬৮টি স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বুধবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৮ এবং মংলা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। তবে এটি খুব ধীর গতিতে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। আজ বুধবার সকাল সাতটায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। এটি আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। মহাসেন আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুব উত্তাল রয়েছে।আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এর গতি পরিবর্তিত হলে মহাসেনের বাংলাদেশের আঘাতের আশংকা রয়েছে। তবে জলোচ্ছ্বাস কী মাত্রায় হবে তা এখনো বলা সম্ভব নয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর পরিচালক শাহ আলম বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে এ কয় ঘণ্টায় ৩ ঘণ্টায় তার অবস্থানের মোটেও পরিবর্তন হয় নাই। তবে এটা কখন আসবে, কত দ্রুত আসবে সেটা বলা এখন সম্ভব হচ্ছে না, কারণ এটার গতি পরিবর্তন এখনো করেনি। গতি পরিবর্তন করলে আমরা তার তীব্রতা বের করতে পারবো। এখনকার মতো যেভাবে আসছে সেটা চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানার সম্ভবনা আছে। সেটা বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ, এর আগে নয়।
তবে মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার ও সমুদ্র জাহাজগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে ২৭টি মন্ত্রণালয়ের এক সমন্বিত বৈঠক হয়েছে।বৈঠকে শেষে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জানান, ১৩টি উপকুলীয় জেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করে দেড় শতাধিক মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাৎক্ষণিক কাজের জন্য অতিরিক্ত ৩ লাখ টাকা, চাল, বিশুদ্ধ পানির আগাম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, যাদের ওখানে কর্মকর্তা আছে, দপ্তর আছে এ সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় ১৩টি জেলা, ৭টি অঞ্চল, ৩৭টি উপজেলা, ৩২২টি ইউনিয়নের সমস্ত কাজ করছে, সবাই প্রস্তুত। আর এটা একটা সর্বাত্মক প্রস্তুতি। অতিরিক্ত ৩ লক্ষ টাকা করে দেয়া হয়েছে ও ১০০ মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়েছে। ৪৯ হাজার ৩৬৫ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। তারা তৈরি, তারা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
তবে জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে।
তথ্য সূত্রঃ www.bdwave.com