ভারাক্রান্ত আমাদের মৃত্তিকা

উম্মে সালমা মৌটুসি

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ, আমাদের দেশের মাটিতে সোনার ফসল ফলে। ” আমাদের দেশের মাটি হলো উরব মাটি”- এটি প্রায় আমারা সবাই বাল্যকালে বাংলা রচনায় পড়েছি। আমাদের ছোট ভাই-বোনরা এখনো এগুলো পড়ছে এবং লেখছে।সেই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাঠ্য বইয়ের পাতায় আর পাতার পর পাতায় লেখা রচনায় আমরা কেবল আমাদের এই মাটির গুণগান গেয়ে গেছি।soil map of bangladesh গত ৩-৪ দশক ধরে দেশের মাটি ছিল ‘সোনার খনি’ কিন্তু, বর্তমান বলে ভিন্ন কথা। আমাদের দেশের মাটির বর্তমান যে অবস্থা তাতে কি একে আর উর্বর বা সোনার চেয়ে খাঁটি মাটি বলা যায়? উর্বর মাটি হলো সেই মাটি যে মাটিতে পযাপ্ত পরিমাণে জৈব পদার্থ এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে যা গাছ ও ফসলের বেড়ে উঠার জন্য আবশ্যক। বিপদজনক খবর হলো  আমাদের মাটিতে এই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান দিন দিন কমে যাচ্ছে ,আমরা আমাদের চারপাশে একটু তাকালেই বুঝতে পারি। যে, পুষ্টি উপাদান প্রাকতিকভাবে আমাদের মাটিতে উপস্থিত থাকার কথা তা আমরা প্রতনিয়ত কেজির পর কেজি মাটিতে দিচ্ছি রাসায়নিক সার হিসেবে।

S35g060101

বেচারা কষক, ক্ষুদ্র জমিতে বেশি ফসলের আশায় সার ঢালছে কিছু না বুঝেই। তারা বুঝতেও পাড়ছে না মাটি বলছে ‘ ছাইড়া দে মা, কাইন্দ্যা বাঁচি’!! আর আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা মাটির ও একটি হৃদয় আছে!? আর সেটা হলো জৈব পদার্থ, ইংরেজিতে organic matter। এই জৈব পদার্থের অবস্থা আমাদের দেশে খুবই করূণ ( ১% এর ও কম, যেখানে ভাল মাটিতে থাকার কথা ২-৩% এর মত) ,আমাদের হৃদয়ের করুণ কান্না শোনানোর জন্য মোবাইল আছে ( রাত ১২ টার পর সাশ্রয়ী রেট) কিন্ত মাটিতো কাউকে পায় না ! দেশের এই শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা প্রাইমারী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পযন্ত মুখস্ত করে এসেছি আমাদের দেশের মাটি উর্বর মাটি জেনেছি আমাদের মাটিতে সোনা ফলে ,তাহলে এখন কি হবে? খুবই চিন্তার বিষয়! আমাদের মাটির দরকার একটু ব্রিশ্রাম। আরও যা করা যেতে পারে-

-চাহিদা বুঝে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা

-অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার না করা

-গোবর, খড় মাটিতে দেওয়া

– জৈব সার ব্যবহার উৎসাহিত করা

– সার এবং কীটনাশক ব্যবহারে সমন্বয় ব্যবস্থাপনা

– বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পাশাপাশি প্রথাগত কৃষি পদ্ধতির সমন্বয় করা

চাষের জমিতে একাধিকবার ক্রমাগত ফসল না ফলিয়ে কিছুটা সময় দেওয়া মাটিকে।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics