ভারতে বন্যা ও ভূমিধস মানবসৃষ্ট!

ভারতের উত্তরাখণ্ডে হিন্দু তীর্থযাত্রী ব্যাপক বৃদ্ধি এবং পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো ভারতের এ রাজ্যে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন অনেক ভারতীয়।  ভারত হিমালয় অঞ্চলের এ যাবৎকালের ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের বিপর্যয় থেকে উদ্ধার পাওয়ার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্যে অনেকে প্রশ্ন করছেন, বিশেষ করে হিন্দু তীর্থ ভ্রমণ ও পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো এ ভয়াবহ দুর্যোগ সৃষ্টিতে কতখানি ভূমিকা পালন করেছে? গার্ডিয়ান। bhumi

উত্তরাখণ্ডে গত সপ্তাহের বন্যায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে এক হাজার মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু এখনো অনেক লোক নিখোঁজ। রাজ্য সরকার অনুমান করছে মৃতের সংখ্যা তিন থেকে পাঁচ গুণ হতে পারে।

১৭ জুনের ভূমিধসে গঙ্গা নদীর দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উপনদী মন্দাকিনি ও আলকনন্দার তীরবর্তী ৬০ মাইলব্যাপী বিভিন্ন শহর, গ্রাম ও সেতু ভেসে যাওয়ার পর ভারতীয়রা প্রশ্ন তুলছে এই বিপর্যয় কি অনিবার্য ছিল নাকি তা মানুষের হস্তক্ষেপের কারণে তা আরো মারাত্মক হয়েছে?

উত্তরাখণ্ডে আগেও বন্যা হয়েছে। তবে এবার তা ঘটেছে তীর্থ যাত্রার ভরা মওসুম। ফলে এবারের মৃতের সংখ্যা বেড়েছে নাটকীয় পরিমাণে। কিন্তু ধর্মীয় পর্যটনের সময় বিপর্যয়টি ঘটায় রাজ্যের দুর্বল অবকাঠামোর করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। ওই অঞ্চলে রয়েছে হিন্দুদের বেশ কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। গত এক দশকে দেশীয় পর্যটকদের ভিড় তিন গুণ বেড়ে প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি দাঁড়িয়েছে। ২০১৭ নাগাদ তা দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটক বেড়ে যাওয়ায় দুই নদীর তীরে গড়ে উঠেছে নিয়ম না মেনে প্রচুর নতুন বহুতল হোটেল, অ্যাপার্টমেন্ট ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। গত সপ্তাহের বন্যায় এগুলোর অনেকটাই ভেসে গেছে। তা ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তরাখণ্ডে অনেক পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পর্বতময় রাজ্যে ৭০টি পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে কিংবা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। গোটা প্রায় ৩০০ পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলোর কয়েটির জন্য বাঁধ দেয়া হয়েছে। আর বেশির ভাগের জন্য পর্বতের ভেতর দিয়ে টানেল করতে হয়েছে।

এখনো নিখোঁজ তিন হাজার

এ দিকে বন্যা ও ভূমিধসে উত্তরাখণ্ডে এখনো তিন হাজার লোক নিখোঁজ রয়েছে। রাজ্যের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে উদ্ধার অভিযানের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে নিখোঁজ লোকদের এ সংখ্যা তুলে ধরেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের সংখ্যা সম্পর্কে একেক গণমাধ্যমে একেক রকম তথ্য আসছে। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হচ্ছে এ পর্যন্ত তিন হাজার লোকের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এরকম পরিস্থিতিতে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্রঃ দৈনিক নয়া দিগন্ত (২৯/০৬/২০১৩)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics