
ভয়ঙ্কর সুন্দর পাঁচ প্রাণ
মাহবুব রেজওয়ান
প্রাণী বৈচিত্র্যের এক মহাসম্ভার আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী। এই পৃথিবীর আনাচে- কানাচে, পর্বতের খাঁজে, সাগরের গভীরে কতো যে সুন্দর, বৈচিত্র্যময় প্রাণী লুকিয়ে আছে তার কোন হিসেব নেই। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন এইসব প্রাণী সম্পর্কে যতটা পারা যায় নতুন কিছু জানতে। কিন্তু, আজও অনেক প্রাণী আছে, যাদের সম্পর্কে হয়তো আমাদের জ্ঞান খুবই সীমিত। আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব এমন কিছু প্রাণী সম্পর্কে, যারা আমাদের কাছে খুব বেশি পরিচিত নয়। শুধু তাই নয়, আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে আজকে যাদের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটতে যাচ্ছে তারা শুধু সুন্দর নয়, ভয়ঙ্কর সুন্দর।পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম সুন্দর কিছু প্রাণী নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
Satanic Leaf-Tailed Gecko
জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতো জ্বলজ্বলে লাল চোখ, মাথার দু’পাশে ছোট্ট দুটি শিং, মুখে শয়তানী হাসি। নিশ্চয়ই আরব্য রজনীর কোন দৈত্যের কথা মনে পরে গেল! না, এটা আরব্য রজনীর কোন দৈত্যের বিবরণ নয়। এটি আমাদের পৃথিবীরই একটি প্রাণী। এরা ইউরোপ্লাটুস (Uroplatus) গোত্রের সবথেকে ছোট সদস্য। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Uroplatus phantasticus । মাদাগাস্কারের অরণ্যে এদের দেখা মেলে। এদের এমন ভয়ঙ্কর রুপের কারণেই হয়তো এরা বেশ জনপ্রিয়। জনপ্রিয় পোষা প্রাণী হিসেবে এদের বেশ ভালোই পরিচিতি রয়েছে। তবে শিকারিদের খপ্পরে পরে দিন দিন এদের সংখ্যা কমে আসছে।
Anglerfish
ভয়ঙ্কর সুন্দর প্রাণীদের মধ্যে এরা অন্যতম। এরা সাধারনত সাগরের গভীরে বাস করে। এই মাছের ২০০ টিরও বেশি প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। এদের বড় বড় দাঁত এদেরকে ভয়ালদর্শন করে তুলেছে। এদের মাথার মাঝ থেকে লম্বা শুঁড়ের মতো বের হয়ে থাকে। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে শুঁড়ের মাথায় আলো জ্বলে, যা এদেরকে শিকার ধরতে সাহায্য করে।
Thorny Devil
এরা একটি দারুন ছদ্মবেশী প্রাণী। সম্পূর্ণ শরীর কাঁটা দিয়ে আবৃত। যেন কাউকেই কাছে ঘেঁষতে দিতে চায় না। এদের ল্যাটিন নাম Moloch Horridus. যার উৎপত্তি প্রাচীন দেবতা মোলোচ(Moloch) এর নাম থেকে। এরা সাধারনত পিঁপড়া এবং অন্যান্য পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা শিকারিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দারুন উপায়ে ছদ্মবেশ নিতে পারে। তখন এরা নিজেদের রক্ষা করতে এদের নকল মাথাকে কাজে লাগায়। এদের আসল মাথাটি নিচে নামিয়ে ফেলে এবং কাঁটাময় পিঠটি উঁচু করে সামনের দিকে ঠেলে দেয়।
Long-Horned Beetle
এদের দেখলে মনে হয়, শিল্পী যেন নিজের হাতে এদের গড়েছেন। অথবা মনে হতে পারে কাঠের তৈরি কোন সুন্দর একটি ভাস্কর্য। এদেরকে সাধারনত দক্ষিণ আমেরিকায় দেখতে পাওয়া যায়। IUCN যেসব প্রাণীকে সবচেয়ে বিপন্ন বলে ঘোষণা করেছে, এরা তাদের মধ্যে অন্যতম।
Basking Shark
পৃথিবীর সবথেকে ভয়াল-দর্শন প্রাণীদের মধ্যে এরা অন্যতম। লম্বায় প্রায় ৩২ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। সামুদ্রিক বাসিন্দাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রজাতির মধ্যে এরা অন্যতম। বিশাল গর্তের মতো মুখটি বলতে গেলে সবসময়ই খোলা থাকে। এর একটি কারন হচ্ছে, এরা ফিল্টার পদ্ধতিতে খাবার গ্রহণ করে থাকে। সাধারনত প্ল্যাঙ্কটন জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে এরা। এদেরকে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। সূর্যের আলোর কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে বলেই হয়তো এদের এমন নামকরন করা হয়েছে।
এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক
২৭/০৮/২০১৩