ব্যাটারি চালিত রিক্সা ; দূষণের নতুন নেয়ামক নয়তো ???
বাংলাদেশ ! দক্ষিন এশিয়ার এই দেশটিতে সবচেয় বড় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে পরিবেশ সম্পর্কে অজ্ঞতা। কথাটি এ জন্যই বলা কারণ, এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে মানুষ বিভিন্ন কাজের দ্বারা পরিবেশকে দূষণ করছে। ব্যাটারি চালিত রিক্সা প্রায় সবাই চেনে।রাস্তায় নামলেই চাপা একটা সা-সা শব্দে আপনার পাশ কেটে চলে যায় বাজারে তুলনামুলকভাবে নতুন এই ব্যাটারি চালিত রিক্সা। আমার মত অনেকেই হয়ত বেশ কয়েকবার এটিতে উঠেছেন ও।সাধারণ রিক্সার মত অনেকটা দেখতে হলেও এর কর্মদক্ষতা সাধারণ রিক্সার চেয়ে বহুগুণ বেশি,কেননা এতে রয়েছে ১২ ভোল্টের শক্তিশালী একটি ব্যাটারি। কিন্তু, কারো মনে কি কখনো প্রশ্ন জেগেছে; রাস্তাঘাটে এই ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলছে তা পরিবেশের উপর কতখানি প্রভাব ফেলতে পারে? কয়েকজন ছাড়া কেউ হয়তো ভাবেনি , বাংলাদেশের মানুষগুলো কেমন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে, পরিবেশ নিয়ে ভাবার সময় নেই কারও। ব্যাটারি চালিত রিক্সাগুলো মূলত মোবাইল চার্জ করার মতোই চার্জ দিতে হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রিক্সাগুলো চার্জ দিতে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রতিদিন প্রয়োজন হয়! আর ও বিপদজনক খবর হলো মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ব্যাটারিগুলি যেখানে -সেখানে ফেলে দেওয়া হয়। বিষাক্ত কিছু ধাতু দিয়ে প্রস্তুত করা হয় ব্যাটারি এর মধ্যে আছে নিকেল,ক্যডমিয়াম,পারদ, সীসা এগুলো পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যর জন্য খুবই ক্ষতিকারক।এক গবেষণায় জানা গেছে,মেয়াদহীন বা Expired Battery গুলোও পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ব্যাটারিগুলো মাটির বাস্তুসংস্থানের উপর ও প্রভাব ফেলে, বিভিন্ন ভাবে বায়ু দূষণ করে Photochemical smog’র মাধ্যমে।আলোক ধোঁয়াশা বা Photochemical smog হয় সূর্যালোক আর ফেলে দেওয়া এসব মেয়াদহীন ব্যাটারির সাথে বিক্রিয়ায়, যা মানব স্বাস্থ্য ছাড়াও গাছপালা ,পশুপাখির জন্য ক্ষতিকারক। ইদানিং সময়ে এই ব্যাটারি চালিত রিক্সা ঢাকা মহানগরীর গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের সকল জেলা শহর এমনকি গ্রামে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, এতে করে আমাদের সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় কিছুটা গতি এসেছে ঠিক, কিন্তু দূর ভবিষ্যতে ব্যাটারি চালিত এই ত্রিচক্র যানের জঞ্জাল আমাদের পরিবেশের উপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে তা ভেবে দেখার সময় কি আমাদের হবে???
সিফাত তাহজিবা মৃত্তিকা,পানি ও পরিবেশ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক