বিষমুক্ত সবজি চাষে নুর জাহানের সাফল্য
গাবতলী (বগুড়া) থেকে আল আমিন মন্ডল : বগুড়ার গাবতলী উপজেলাতে কৃষকরা কীটনাশক (বিষ) ছাড়াই উন্নতজাতের কুমড়া, বেগুন, পটলসহ সবজি চাষ করছে। ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কীটনাশক ছাড়াই সবজি চাষের প্রযুক্তি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে। বিষমুক্ত কুমড়া চাষ করেছেন উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের চকডমর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিলুর স্ত্রী আদর্শ নারীকৃষক স্বাবলম্বী নুরজাহান বেগম। সে নিজের তত্ত্বাবধানে ২৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করেছে।
আইপিএম স্কুলের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আজ সে নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি এ মৌসুমে ১একর জমিতে কুমড়া ও সবজি চাষ করে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় করেছে। ওপরে কুমড়া নিচে ধানের বীজ (বর্ষালী আঁউশ হাইব্রীড) বপন করেছে। কুমড়া চাষে সে জমিতে জৈবিক বালাই দমন ফাঁদ (সেক্স ফেরোম্যান ট্রাপ) ব্যবস্থাপনার জন্য ৫ফুট উচ্চতার ২টি বাঁশের খুঁটি, মাচা থেকে ২ ফুট উঁচুতে আড়াই শতক জমির জন্য ১টি করে বোতল (সাদা কৌটা) জমিতে দিয়ে রাখতে হয়। এই বোতলের মধ্যে সাবান বা হুইলের পানি রেখে দিতে হয়। সে পানির মধ্য স্ত্রী পোকার গন্ধ থাকে সেখানে ফসলের জন্য ক্ষতিকারক পুরুষ পোকা আকৃষ্ট হয়ে লিওর গন্ধে আঘাত পেয়ে মারা যায়। বোতলের পানিগুলো ৫দিন পরপর পরিবর্তন করে দিতে হয়। এ পদ্ধতি ফসলের জন্য নিরাপদ। কীটনাশক প্রয়োগ না করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। কুমড়া চাষের প্রধান শত্রু পোকা পাপকিং, বিটল পোকা মাকড়, জাব পোকাকে ধ্বংস করতে সেক্স ফেরোম্যান ট্রাপ কৃষকদের নিকট এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চকডমর আইপিএম কৃষক মাঠ-স্কুল ও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ওই এলাকার আবুল, মমিন, কালাম, আমিনুর, শাহিন, বুলুসহ অনেকে এখন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কৃষক স্কুলের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন জানান, আমরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে জমিতে বিষমুক্ত ফসল চাষ করছি। সফল নারী কৃষক নুরজাহান জানান, আমি নিজে ফসল ফলায়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন আমি লাভবান হয়েছি। আইপিএম স্কুল আমাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, নেপালতলী ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষক বিষমুক্ত সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সফল নারীকৃষক নুরজাহান এলাকার এখন উদাহরণ। গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার স ম মেফতাহুল বারি জানান, গাবতলীতে সবজি চাষে কৃষকরা বেশি ঝুঁকে পড়েছে। এ মৌসুমে ফলন ও উৎপাদন ভাল হয়েছে। কৃষক লাভবান হবে।
সূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব (১৯/০৭/২০১৩)