
বহুরূপী গিরগিটি
Oriental garden Lizard অথবা Eastern garden Lizard অথবা Color changeable Lizard, বাংলাতে বহুরূপী গিরগিটি হিসেবে সুপরিচিত । যার বৈজ্ঞানিক নাম – Calotes Versicolor । এটি ব্যাপকভাবে এশিয়া সহ বিশ্বের অনেক দেশে সুপরিচিত একটি প্রজাতি । পুরুষ গিরগিটির সাধারণত প্রজনন ঋতুতে উজ্জ্বল লাল গলা দেখা যায় , যে কারণে “রক্তচোষা “ নামে এর ভ্রান্ত নামকরন হয়েছে যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই । রঙ পরিবর্তনের বৈশিষ্ট্যর কারনে বহুরূপী গিরগিটি নামে এটি সমাদৃত।
ইরান , আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, ভারত ( আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ ও মূল ভূখন্ড ), শ্রীলঙ্কা , মায়ানমার, থাইল্যান্ড, পশ্চিম মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ ইন্দোনেশিয়া , মরিশাস ,ওমান , সিঙ্গাপুর, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় । রঙ পরিবর্তন করা গিরগিটি অপেক্ষাকৃত সাধারণ এবং আবাসস্থল বিস্তৃত হবার কারনে এরা মানুষের আবাসস্থলের সাথে নিজেরদের ভালভাবে মানিয়ে নেয় এবং বিপন্ন অথবা বিলপ্তপ্রায় হয়নি এখনও ।
এরা প্রায় ৩৭ সেমি. দীর্ঘ ,মাথা থেকে লেজের গোঁড়া পর্যন্ত প্রায় ১০ সেমি দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ।এর কাঁটা দুটি ছোট এবং পুরোপুরি প্রতিটি মধ্যকর্ণ উপরে, পৃথকভাবে চিহ্নিত করা যায়। পরিমিতরূপে ঘাড় এবং ট্রাঙ্ক এর অগ্র অংশ উঁচু ,কাঁধে সামনে কোথাও ভাঁজ , কিন্তু নিম্ন চোয়ালের পিছনে আইশ অন্যদের তুলনায় অনেক ছোট হয় ; পিছনের পা ( গোড়ালি থেকে চতুর্থ পদাঙ্গুলি এর প্রান্তসীমা ) বয়স্কদের মধ্যে মাথা তুলনায় অনেক বেশি বড় হয় না, যতক্ষণ না এটি পরিণত বয়স্ক হয় , পাপড়ির মাঝে মাঝে কটা ইউনিফর্ম ,জলপাই অথবা হরিদ্রাভ খুব পরিবর্তনশীল । রঙ সাধারণত একটি হালকা কটা জলপাই , কিন্তু গিরগিটি কালো , উজ্জ্বল লাল রঙে এটি পরিবর্তিত হতে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে কখনও কখনও পুরো শরীর এবং পুচ্ছ হতে মাথা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হয় ।এই উজ্জ্বল, পরিবর্তনশীল রং মে এবং জুন মাসের মধ্যে পতিত হয় , যা প্রজনন পর্বের সময় পুরুষের সম্মত হবার লক্ষণ ।
স্বাভাবিকভাবেই খোলা বনে এদের পাওয়া যায় । কিন্তু শহুরে পরিবেশে এরা ভাল অভিযোজিত হয়েছে এবং কৃষি এলাকায়, পার্ক, বাগান, এবং ঝোপঝাড়ে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে ।এরা ছোট পোকামাকড় খেয়ে pest control করতে সাহায্য করে এবং মাঝে মাঝে ছোট গিরগিটি , তীক্ষ্ণদন্ত সম্পন্ন ক্ষুদ্র প্রাণী ও বীজ খেয়ে থাকে।
প্রজনন মওসুমে পুরুষ গিরগিটি স্ত্রী গিরগিটির সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার সময় বার বার মুখ খুলতে এবং বন্ধ করতে থাকে এবং মাথা উঁচু করে সংযোগ স্থাপনের জানান দেয় । প্রজনন ঋতুর সময় একমাত্র মানুষের দ্বারা তটস্থ হলেই সাধারণত পুরুষরাই এই আক্রমণাত্মক আচরণ প্রদর্শন করে থাকে।
© All rights reserved by Author Rahat Azim Chowdhury . (Engineer), System security co-ordinator at Genesis Technologies Ltd.
Naturalist and Photographer at Light & Composition Magazine, New York. E-mail: ra_chow@hotmail.com