বটিয়াঘাটায় ২ হাজার হেক্টর তিলক্ষেত পানির নিচে
কাজী শামীম আহমেদ খুলনা
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির তিল নষ্ট হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের প্রভাবে এবং গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে এসব তিলক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তিলের সঙ্গে তরমুজ, ডাল ও সবজি ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সাতটি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৪৫২ হেক্টর জমিতে তিল, ৫৫ হেক্টরে তরমুজ, ১ হাজার ২৮৫ হেক্টরে ডাল ও ৬৪০ হেক্টরে সবজি চাষ করা হয়। দুর্যোগ ও প্রবল বৃষ্টিপাতে ফসলি ক্ষেতে পানি জমে ২ হাজার হেক্টর জমির তিল, ৩০ হেক্টর তরমুজ, শতাধিক হেক্টর ডাল ও ২২৫ হেক্টর জমির সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা।
বেসরকারি একটি সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ৭০ হেক্টর জমির সূর্যমুখীর মধ্যে ২০ হেক্টরের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু কৃষি অফিসের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই বলে দাবি করেছেন কৃষকরা। তাদের মতে, ক্ষতির পরিমাণ দেড় গুণ। কারণ ঘূর্ণিঝড় মহাসেন-পরবর্তী টানা বৃষ্টিতে পানি জমে ফসলের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের ডেউয়াতলা গ্রামের কৃষক আ. রউফ জানান, ঝড়ে ক্ষতি না হলেও বিরতিহীন বৃষ্টিতে তার ১২ বিঘা জমির মধ্যে প্রায় আট বিঘার তিলই নষ্ট হয়েছে। হোগলবুনিয়া গ্রামের কৃষক অনুপম বিশ্বাস বলেন, তিনি চার একর জমিতে তিল চাষ করেছিলেন। আর ২০ দিন পরই ক্ষেত থেকে তিল সংগ্রহের কাজ শুরু হতো; কিন্তু বিরামহীন বৃষ্টির কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। সাতটি ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতি হলেও সবচেয়ে বেশি হয়েছে বটিয়াঘাটা সদর ও গঙ্গারামপুর ইউনিয়নে।
জানা যায়, উপজেলায় গত বছর আট হাজার হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছিল। আশানুরূপ ফসল ও চাষীরা বেশি দাম পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা অধিক জমিতে তিল চাষ করে। তুলনামূলক ফলনও ভালো হয়েছিল। আর কিছু দিন পরই অনেক চাষী তিল ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় তারা এখন হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বুদ্ধদেব সেন জানান, ঝড়ের পর এক জরিপে ৬৩০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। তিল শুষ্ক মৌসুমি ফসল হওয়ায় বৃষ্টির কারণে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।
সূত্রঃ বণিক বার্তা ১/০৬/২০১৩