পানি বিশুদ্ধকরণে বামন প্রযুক্তি
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসসহ বিভিন্ন অণুজীব এবং দূষিত অন্যান্য উপাদান অপসারণের মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধকরণে ন্যানোটেকনোলজি বা বামন প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দিতে পরিবারপিছু খরচ পড়বে বছরে তিন মার্কিন ডলারের কম। নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
ন্যানোটেকনোলজি বলতে বোঝায় সামান্য পরিমাণ থেকে কয়েক শ ন্যানোমিটার পর্যন্ত ব্যাসের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার ব্যবহারে প্রযুক্তির প্রয়োগ। কিছু অনন্য ভৌতরাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের কারণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব কণা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহারে প্রভূত সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাবার পানির সংকট দূরীকরণের পাশাপাশি কৃষি, জ্বালানি ও চিকিৎসাক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহারের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলছে।
পানি বিশুদ্ধকরণের যন্ত্রটি তৈরি করেছেন ভারতের চেন্নাইয়ে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মাদ্রাজের একদল গবেষক।
এটি ন্যানোপার্টিকলের বিশেষ মিশ্রণের সাহায্যে পানি থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো ছেঁকে (ফিল্টার) আলাদা করবে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কুয়া ও অন্যান্য স্থানীয় উৎস থেকে সংগৃহীত পানি বিশুদ্ধকরণে যন্ত্রটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গবেষক থালাপ্পি প্রদীপ বলেন, যন্ত্রটি সাশ্রয়ী মূল্যে একটি ছোট পরিবারের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১০ লিটার পানি বিশুদ্ধ করে দিতে পারবে। এতে স্থানীয় পানিসংকট দূর করা সম্ভব হবে। আফ্রিকা ও অন্যান্য অঞ্চলে আর্সেনিক একটি ভয়াবহ সমস্যা। এটি দূরীকরণের লক্ষ্যেও কাজ চলছে।
পানিতে অণুজীব ছাড়াও আর্সেনিক ও কীটনাশকের মতো রাসায়নিক উপাদান মিশে থাকে। নতুন যন্ত্রটিতে ন্যানোপার্টিকল মিশ্রণ থেকে সিলভার আয়নের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ পানির বিভিন্ন অণুজীবকে ধ্বংস করে দেয় এবং ফিল্টারে স্থাপিত অন্যান্য সমন্বিত বস্তু পানি থেকে রাসায়নিক অপদ্রব্যগুলো দূর করে। ফিল্টারের ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার সময়ই বিশুদ্ধকরণের যাবতীয় ধাপগুলো ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই সম্পন্ন হয়। লাইভসায়েন্স।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো (১৩/০৫/২০১৩)