নতুন প্রাণী ওলিঙ্গুইতো
কলম্বিয়া ও ইকুয়েডরে বাস করে এমন ধরনের এক বিরল প্রজাতির প্রাণীর দেখা পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন বিজ্ঞানীদের দাবি_ এটি এমন এক প্রাণী, যা আগে যুক্তরাষ্ট্রে দেখা যায়নি। অর্থাৎ প্রাণীটিকে সম্পূর্ণ নতুন বলেই মনে করছেন তারা। প্রাণীটির নাম রাখা হয়েছে ওলিঙ্গুইতো। ৩৫ বছরের মধ্যে পশ্চিম গোলার্ধে স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে এটিকে আবিষ্কারের ক্ষেত্রে এক নতুন সংযোজন মনে করা হচ্ছে।
প্রাণীটিকে শনাক্ত করতে সময় লেগেছে প্রায় এক দশক। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এটি সত্যিই এক বিরল প্রজাতির প্রাণী। এ প্রাণী আবিষ্কারের কৃতিত্ব হলো স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের বিজ্ঞানীদের।
অনুসন্ধান শুরু হয়েছিল শিকাগোর একটি জাদুঘরে প্রাণিবিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার হেলজেনের কিছু প্রাণীর হাড় ও চামড়া দেখার পর। হেলজেন বলেন, ‘এটি দেখার পর আমি থমকে দাঁড়ালাম। চামড়ার রঙটা ছিল অসম্ভব লাল। যখন কঙ্কালটা দেখলাম, প্রাণীটিকে চিনতে পারলাম না। আমার দেখা সব প্রাণীর চেয়ে এটির আকার এবং
শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনেকটা পৃথক। আমার মনে হচ্ছে, এটি হয়তো নতুন এক প্রজাতির প্রাণীর নমুনা।’
ড. হেলজেন ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির স্তন্যপ্রাণী বিভাগের কিউরেটর। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংগ্রহশালা ওই জাদুঘর।
খুব বেশি লম্বা নয় ওলিঙ্গুইতো। মাত্র ১৪ ইঞ্চি বা ৩৫ সেন্টিমিটার। তবে ২ পাউন্ড ওজনের শরীরটায় লেজের বাহার খুব, ১৩ থেকে ১৭ ইঞ্চির মতো। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের আকার-আকৃতি সমানই প্রায়। মূল খাদ্য গাছের ফল। তবে শৌখিন বটে। ফুল থেকে মধু আহরণেও এরা সমান আগ্রহী। আর কীটপতঙ্গ দিয়ে অভাব মেটায় প্রাণীজ প্রোটিনের। বাস করে শীতল বনভূমি অঞ্চলে। ইকুয়েডরের আন্দিজ পর্বতমালার উত্তরাংশ এবং কলম্বিয়ার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচু বনাঞ্চলে।
এই প্রাণীর কঙ্কাল যে আগেও সংগ্রহ করা হয়নি, তা নাও হতে পারে। তখন এটাকে আলাদা কিছু বলে শনাক্ত করা হয়নি। অবশ্য একশ’ বছর আগে কোনো প্রাণীকে অতটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে শনাক্ত করা সম্ভবও ছিল না। আগে এটিকে ভাল্লুকের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বর্তমানে ডিএনএ প্রযুক্তি ব্যবহারে এটাকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে অসুবিধা হয়নি। প্রচুর লোম থাকায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডাতেও এরা নিজেদের শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে পারে। খবর বিবিসি অনলাইনের।
সূত্রঃ দৈনিক সমকাল (১৭/০৮/২০১৩)