ছেঁড়া গেল না মায়ার বাঁধন
এম এইচ আরমান চৌধুরী, চকরিয়া (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কেই থাকবে এতদিন সেখানে পরম মমতায় বেড়ে ওঠা ব্যাঘ্র শাবক জয়, জ্যোতি, জুঁই। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা এই তিন বাঘ শাবককে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন গাজীপুরে নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের জন্য। কিন্তু ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের সংশ্লিষ্টদের মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে ফেলেছে ব্যাঘ্র শাবক তিনটি। তাদের আর যেতে দেননি তারা। ফলে শাবকদের পূর্ব ঠিকানাই বহাল থাকছে।
প্রায় ৯ মাস আগে ঢাকার শ্যামলী এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাড়ি থেকে র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হওয়া এই তিন ব্যাঘ্র শাবক পরম মমতায় বেড়ে উঠেছে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বিশ্রামাগারের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। এখন এই তিন শাবক পুরোপুরি হিংস হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে পার্কে গিয়ে দেখা গেছে, জয়, জ্যোতি, জুঁই এদিক ওদিক লাফালাফি করছে। মানুষ দেখলেই তেড়ে আসছে সামনে। ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর বাঘের এই তিন শাবককে এখানে আনা হয়। পার্কের কর্মকর্তারা পুরুষ শাবকটির নাম জয় আর মেয়ে শাবক দুটির নাম রাখেন জ্যোতি ও জুঁই। তিনি বলেন, শাবকগুলোর স্বাভাবিক বিকাশ ও শারীরিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য পার্কে আনার পর খাদ্য হিসাবে তাদের দেয়া হতো পুষ্টিকর দুধ রিপ্লেসার ও নিউট্রি-প্লাস জেল। পাশাপাশি সুস্থ থাকতে দেয়া হতো নিয়মিত টিকা। শাবকগুলো বড় হয়ে উঠলে তাদের দেয়া হতো মুরগী, গিনিপিগ, খরগোশ, শূকর, ছাগল, হরিণ। সাফারি পার্কের বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শাবকগুলো যখন ডুলাহাজারা পার্কে আনা হয় তখন এক একটির ওজন ছিল ১৫ কেজি। বর্তমানে প্রতিটি শাবকের ওজন ৪৫-৫০ কেজি হয়েছে। আর এখন একটি শাবককে প্রতিদিন ৪ কেজি করে গরুর মাংস খাদ্য হিসাবে দিতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে শাবকগুলো শারীরিকভাবে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক (১৮/০৭/২০১৩)