চেঙ্গীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কায় শত পরিবার
বছর ঘুরে আবারো এলো বর্ষা, এ যেন ভিটেমাটি ছিনিয়ে নেয়ার ঋতু। এ ঋতুর আগমনে চেঙ্গী নদীর তীরে বসবাসকারী শত শত পরিবার। তাদের বসবাসকারী একমাত্র অবলম্বন ভিটেমাটিটুকু হারানোর আশঙ্কায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। প্রতি বছরেই নদীর ভাঙনের কারণে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছের নদীর তীরবর্তী বসবাসকারীরা। বর্ষার শুরুতে এ বছরেও শুরু হয়েছে ভাঙন।
খাগড়াছড়ি পৌর শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা চেঙ্গীর ভাঙনে প্রতি বছর গঞ্জপাড়া গ্রামের শত শত একর ফসলের জমি ও বসতভিটা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহের বৃষ্টিতে নদীর তীরে বসবাসকারী রুইফি মারাম ও সোনাদিবি মারমার ঘর ভেঙে যায়। বর্তমানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ব্রিজ, স্কুল ও শতাধিক বসতবাড়ি। সদর উপজেলার গোলাবাড়ী মৌজার গঞ্জপাড়া গ্রামটি গত ৩০ বছর ধরে ভাঙছে। ইতোমধ্যে চেঙ্গীর ভাঙনে গ্রামটির চার শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি এবং এক হাজার কানি ফসলের জমি বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, চেঙ্গীর তীরে গঞ্জপাড়া চার শতাধিক পরিবার বসবাস করে। নদীর তীরে বসবাস করায় প্রতি বছর বর্ষায় তাদের একমাত্র বাসস্থানটুকুও নদীতে হারিয়ে যায়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রুইফি মারমা ও সোনাদিয়া মারমার বসতঘর ভেঙে যায়। বর্তমানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ ভাঙন রোধে এলাকাবাসী মানববন্ধন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে এলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।
এলাকাবাসীর পক্ষে নুরুল আমিন নুরু এবং ব্যবসায়ী আবদুর রহিম জানান, গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নদী ভাঙন রোধে পাথর দিয়ে কিছু বাঁধ দেয়া এবং নদী পারাপারের জন্য ব্রিজ করলেও এ সরকারের সাড়ে চার বছরে কোনো কাজ হয়নি। তারা আর বিলম্ব না করে দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় প্রকল্প গ্রহণ করে এই চেঙ্গীর চার পাশে বাঁধ দিয়ে তাদের ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার দাবি জানান। খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম জানান, চেঙ্গী গঞ্জপাড়া গ্রামবাসীর জন্য অভিশাপ। তিনি অবিলম্বে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মাসুদ করিম জানান, নদী তীরে বসবাসকারী এলাকায় পরিদর্শন করা হবে। সেখানের বাস্তব সমস্যা নির্ণয় করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সরকারের কাছে চিঠি লিখবেন।
সূত্রঃ দৈনিক নয়া দিগন্ত (১২/০৫/২০১৩)